পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খুলে যেন ই করে আমায় গিলতে চাচ্ছে। আমি সো করে আকাশে উঠে পড়লুম, সেখানে একটা কলের চিমনির কালে ধোয়ার মধ্যে পড়ে মনে হল যেন দম বন্ধ হয়ে গেল। খানিক ধোয়ার সঙ্গে উড়তে উড়তে ছাতুবাবুর মাঠে চড়কগাছটা দেখে যেমন বসতে যাব, অমনি সেটা কেঁক করে চেচিয়ে উঠে আমাকে সাতপাক ঘুরিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলে, একেবারে গোলদিঘির মাঝে জম্বুদ্বীপে। পড়েই খানিক আমি চিৎপাত হয়ে ঘাসের উপর গড়িয়ে নিলুম। আমার ঠিক মনে হচ্ছে যেন পাখি হয়ে গেছি, ভুলেই গেছি যে মানুষ ছিলুম। খিদে পেয়েছিল –টুপ করে একটা ফড়িং ধরতে গিয়ে দেখি, হাত ফসকে সেটা পালিয়ে গেল। তখন মনে পড়ল পাখিরা যে ঠোটে করে ফড়িং ধরে। গোলদিঘির জল দেখেই আমনি আমার, সব ছেলেদের যেমন তেমনি, বড় তেষ্ট পেয়ে গেল। আমি টিয়েপাখির ঠোটের মতো ছোট্ট নাকটা জলে ডুবিয়ে জল খেতে গেছি আর সে। করে নাকে-মুখে জল ঢুকে হেঁচে বাচিনে । আমার চান করতে ইচ্ছে হল যেমন জলে নাবা অমনি ঝুপ করে কাদায় পড়ে গেছি। তাড়াতাড়ি জল ছেড়ে উঠে, মনে হল কী যেন করা উচিত, কিন্তু জল লাগলে পালকগুলো ঝেড়ে-ঝুড়ে ঠোটে করে খুটে-খুটে যে শুকিয়ে নিতে হবে, সেটা আমার মনেই এল না । তখন রাত হচ্ছে । ওপারে জগন্নাথঘাটে র্ক,সর ঘণ্টা বাজছে আর এদিকে রায়দের বৈঠকখানায় সারিঙ্গী আর তবলা বাধার শব্দ পাচ্ছি। আমি বিরক্ত হয়ে জামগাছের ডালে ঘুমোতে গেলুম। প্রথমটা ডালে বসে ঘুমোতে আমার ভয় করতে লাগল। বুঝি-ব পড়ে গেলুম। কিন্তু একটু পরেই অভ্যাস হয়ে গেল। গুটিমুটি হয়ে জামগাছের ডালে ঘুমিয়ে পড়লুম। আমার গায়ে তখন তো .পালক ছিল না, রয়েছে খালি পাতলা কঁথাখানি ; রাত্তিব থাকতেই শীত করতে লাগল, জেগে উঠলুম। আমার মাথা যেন ভার বোধ হল আর নাকটা মুডুমুড় করতে লাগল। বুঝলুম কী যেন অসোয়াস্তি হচ্ছে ; কিন্তু সদি ঝেড়ে দেবার জন্তে যে মাকে ডাকতে SSÉ