পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হবে সেট তখন মনেই এল না। কাজেই আমি ভাবলুম কাউকে শুখাই কী করতে হবে, নাকটা নিয়ে এদিক-ওদিক চাইতে লাগলুম। ছজন জোনাক পোকা লণ্ঠন জালিয়ে ভোর রাত্তিরে ঘরে ফিরছিল, যেমন আমায় দেখা অমনি ফস করে আলো নিভিয়ে একটা অন্ধকার গলির মধ্যে লুকিয়ে পড়ল। পাখিদের সঙ্গে পোকার ঝগড়া আছে বলে, রাত-বিরেতে একটা কথা শুধোতে গেলে যে তারা এমন অভদ্রতা করবে তা কে জানে। এক ছুচো গায়ে বিদঘুটে রকম এসেন্স মেখে একটা থিয়েটারের প্রোগ্রাম থেকে কিচমিচ করে একটা গান গেয়ে চলেছিল, তার কাছে যেতেই সে একটা থলপদ্মর আড়ালে লুকিয়ে পড়ল। যাকে শুধোতে যাই সেই দেখি পালায়। পাখিদের ডোমপাড়ায় একদল ব্যাঙ হোগলাতলায় বসে রোদ ওঠবার আগেই যতগুলো পারে ছাতা বানিয়ে ফেলছিল, আমাকে দেখেই তারা চম্পট দিলে, ছাতাগুলো ফেলে। পাখিদের গোয়ালা যত গোসাপ, তারা রাত থাকতে দুধে জল মেশাচ্ছিল গোলদিঘির ধারে, তারা আমাকে পুলিসম্যান ভাবলে বোধ হয়, যেমন দেখা অমনি দুধের কেঁড়েগুলো উল্টে দিয়ে একেবারে সাতবে ওপারে পালাল। এ-ওদিকে পালায়, ও সেদিকে ; ওখানে কেউ পিদিম নিভিয়ে অন্ধকারে লুকোয়, সেখানে কেউ বাসার দরজা ঝপ করে বন্ধ করে দেয়। আমাকে দেখে যেন চারদিকে সোরগোল পড়ে গেল –বাগানে মানুষ এসেছেরে । মানুষ ! ওদিকে শুনলুম কেল্লার মধ্যে দামামা বাজছে। আমার ভয় হল এইবার তেলেঙ্গি সেপাই সব আমাকে ধরতে আসছে । আমি যে মানুষ কোনখানটায়, তা তো আমি কিছুতেই ভেবে পাইনে । দেখলুম তেলাপোকার মতো খয়েরি রঙের সব তেলেঙ্গি বন্দুক ঘাড়ে চৌরঙ্গ বেয়ে আসছে। কিন্তু যেমন দূর থেকে আমায় দেখা, “ওই ওদিকে, ওই ওদিকে বলে, রাইট লেপটু, রাইট লেপটু’ করতে করতে তারা লালদিঘির চারদিকে ঘুরতে লাগল। আমি ইফ ছেড়ে বঁাচলুম। ృ9ఖ