পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাগানের রামলীলে, সাতপুকুরের গোলকধাঁধা, এসব কিছুই দেখতে পাব না।’ না, তুমি গোলদিঘি পেরিয়ে ওপারে যাবে কেমন করে ? যখন উড়তেই পার না ? আমি শুধালেম, আমি তবে করব কি ? & কাক বললেন, ’খাও দাও, বাঁশি বাজাও । এই বলে তিনি, একটা ছেড়া মোজা তার বাসার কাছে ঝুলছিল, সেটা থেকে একটা ছোট্ট বাশি আমাকে বার করে দিলেন ; আমি বঁশির দাম কোথা পাব বলতে কাক বললেন, ‘দাম সময়মতো দিও।' বাশিটা চমৎকার বাজত। পাখিরা পরীরা, এমন কি, সাপ ব্যাঙ মাছি টিকটিকি ফড়িং প্রজাপতি সিংহী বাঘ, তারাও ভালোসত সেই বাঁশি শুনতে। কিন্তু তবু আমার রকম-সকম দেখে তারা আমার খুব কাছে আসতে চাইত না, উল্টে বরং ডিম ফুটে পাখির ছানাগুলো আমায় দেখে হাসাহাসি করত, যেন আমিই নতুন জানোয়ার, তারা কেউ নতুন নয়। আমি বসে-বসে দেখতুম, ডিম ফুটে বেরিয়ে দিন কতক পরে পাখির ছানাগুলো উড়ে-উড়ে ওপারে চলে যায়। শুনলুম তারা সব মানুষ হতে যাচ্ছে। পাখিব মায়েরা ডিম ফোটাতেই জানে, মানুষ করতে হয় কেমন করে তা তারা ভালো জানে না । বাচ্ছাগুলো বড়ো হলেই ভার ঠেলে তাদের বাসা থেকে ফেলে দেয় আর উড়তে-উড়তে তারা যেখানে পারে মানুষ হতে চলে যায়। যখন ডিম ফুটতে দেরি হচ্ছে, তা দিয়েদিয়ে আর পারে না তখন আমি শুনেছি পাখির মায়েরা বলছে, ‘ওরে দেখসে, পুতু কেমন করে চান করছে আর জল খাচ্ছে। অমনি হাজার হাজার পাখির ছানা তাড়াতাড়ি ডিম থেকে বেরিয়ে দেখতে আসে আমি কী করছি। আমাকে পাখিরা এটা-ওটা গাছ * থেকে ফেলে দিত, আর আমি হাতে করে সেগুলো খেতুম। তখন তারা ভারি মজা পেত । . আমি তো পাখিদের মতো পোকা মাকড় ফড়িং খেতে চাইতুম ১৩৯