পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোল ধরে কেন জানো ? যখন খুব শীতকালে আমার আম খেতে । ইচ্ছে হয়, মনে হয় গরম পড়লে বাচি, সেই সময় আমি এক-একদিন বঁশিতে বাজাই বসন্তবাহার মুরে, আমের বউল আসলে নোচনোচ, আমের বউল আসলে বাড়ি-বাড়ি, আমগাছটা ওপার থেকে শুনে মনে করে বুঝি সত্যিই বসন্তকাল এসেছে, আর অমনি সবার আগে তার বোল ফুল হয়ে ফোটে। “ কিন্তু থেকে-থেকে একএকদিন আমার মন ওপারে যেতে, মায়ের কাছে যেতে, সব' ছেলেমেয়ে যেমন খেলে তেমনি করে খেলে বেড়াতে, কেমন কেমন করতে থাকে, সেদিন আমার বঁাশিতে কান্নার সুরে কেবলি দুঃখু বাজে, পারে চল পারে চল, মায়ের কোলে, মায়ের কোলে খেলাঘরে ? পাখিরা সেদিন কত মায়ের কত ছেলেমেয়ের খবর আমাকে এনে দেয় আর আমি একলাটি বসে কাদি । মানুষ তোমরা আমার কথা শুনে নিশ্চয়ই মনে-মনে হাসছ আর ভাবছ, সাতরে গোলদিঘির ওপারে গেলেই তো গোল চোকে । কিন্তু আমি তো ঠিক মানুষটি নয়, কাজেই মানুষের বয়সের সঙ্গে যেমন বুদ্ধি বেড়ে টেকি হয়ে ওঠে, আমার তো হল না। আমার যতটুকু বুদ্ধি তাতে বুঝলুম, সাতরাগাছির ইস্কুলে সাতার না শিখে সাতরাতে গেলেই ভুস করে ডুবে যাব। পাখিদের মধ্যে হাস সাতার দিতে মজবুত কিন্তু হাস সাতার শেখাতে একেবারেই জানে না, তারা বলে, ‘সাতার আবার শক্তটা কী ? জলের উপর সে পা ছুটে দিয়ে কেবল পিছনের দিকে লাথি চালাও । একদিন হাসেদের বুদ্ধি শুনে সাতরাতে গিয়ে ডুবেছিলুম আর কি ! দূরে সব রাজহাস ভাসত, আমি তাদের একজনকে আমার সারাদিনের খোরাক যা কিছু সব একদিন দিলুম কিন্তু রুটি যখন ফুরিয়ে গেল তখন, কী করে ভাসতে হয় শুধোতেই, দেখলুম রাজহাসটা ফোস করে উঠে আমাকেই এক ঠোকর বসিয়ে, আস্তে-আস্তে ভেসে, ওপারে কেউ আমার মতো বোকা আছে কিনা দেখতে গেল । একদিন একখানা রুইতনের মতে কাগজের একটা কী পাখি S8}