পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাচ্ছিল, জুতো খাচ্ছিল, চাবুক খাচ্ছিল, আছাড় খাচ্ছিল, হিমসিম খাচ্ছিল, মোচড় খাচ্ছিল, কানমলা খাচ্ছিল, গলাধাক্কা খাচ্ছিল, টোল খাচ্ছিল্প, দোল খাচ্ছিল, ভ্যাবাচাক খাচ্ছিল, কত খাবারের নাম করব, এমন খাওয়া কোথাও খাইনি। নুন থেকে কচুপোড়া আর ঘণ্টা পর্যন্ত । এত খাওয়া-দাওয়া, তবু শিবঠাকুরের মন গলছে না। সরকারি ডাক্তার থেকে-থেকে র্তার বুকে চোঙা বসিয়ে ঘড়ি দেখছেন আর কেবলি ঘাড় নাড়ছেন। কত সুন্দর-সুন্দর পর তার চারদিকে ঘিরে মিষ্টি কথায় তার মন গলাতে চেষ্টা করতে লাগল। তুমি আমি হলে গলে একেবারে জল হয়ে যেতুম কিন্তু শিবঠাকুর কাদাও হলেন না। বরফের পাহাড়ের মতে থির হয়ে বসে রইলেন । লালদিঘির গরম গরম লালপানি কত যে খাওয়ানো হল কিন্তু তাতে শিবঠাকুরের মনটা গলা দূরে থাক বরং আরো জমে উঠল তার ঘুম । আমি একপাশে দাড়িয়েছিলুম, সরকারি ডাক্তার আমাকে ইশারা করলেন কাছে এসে দেখতে, কিন্তু তামি তার মতলব বুঝেছিলুম, সেদিকেই গেলুম না। পরীরা আমার হাতে-পায়ে ধরতে লাগল, আমি বললুম, “ওই সরকারি গোবদ্যিটাকে সরিয়ে না দিলে আমি রোগ সারাতে পারব না। আব আগে আমাকে তোমাদের রানী দুটি বর দিন, তবে তোমাদের বরটি ভালো হবে।’ পরীরানী তখন বললেন, তবে এইখেনে হাটু গেড়ে বোস, বল কী বর চাও।” আমি বর চাইলুম, “আমি আমার মার কাছে যেতে পারি যেন। আমি পরীদের দেশে থেকে তাদের বাঁশি শোনাই, এইটেই সবার ইচ্ছে ছিল । পরীরা বললে, “এ কি আবার বর হল ? একটা বরের মতো বর নাও ’ আমি বললুম, তবে আমি যেন মায়ের কাছে যেতে পারি, কিন্তু যদি মা আমায় চিনতে না পারেন, তবে যেন আবার এখানে ফিরে আসতে পারি ? ১৫২