পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখনো আমার লাল ফতুয়া, লাল জুতুয়া সেখানে রয়েছে। একবার ভাবলুম পরে দেখি, কিন্তু ভয় হল যদি আর খুলতে না পারি। সিন্দুকের কোণে আমার ঝুমঝুমিটা ছিল সেটা হাতে নিলুম। কে জানে, সেটা বেজেছিল কিনা, ওদিক থেকে মা বলে উঠলেন, ‘পুতু! আমি ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গেলুম। তারপর শুনলুম, মা একটি নিশ্বাস ফেলে আবার ঘুমোলেন। আর একবার যদি মা ডাকতেন তবে নিশ্চয়ই আমি ধরা দিতুম। কিন্তু আর তিনি ডাকলেন না, আমি উঠে গিয়ে দেখলুম তার ঘুমন্ত চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়েছে। আমি অনেকক্ষণ ধরে মায়ের পায়ের কাছে বসে, আমার নাম দিয়ে ঘুমপাড়ানো গান বাঁশিতে বাজালুম, যদি মা জেগে ওঠেন । আমার ইচ্ছে হচ্ছিল, মা জেগে উঠে আমার বাশি শুনে অবাক হয়ে বলেন, আহ, কী বাঁশি বাজালি পুতু! কিন্তু দেখলুম মা অকাতরে ঘুমুচ্ছেন। খোলা জানল আবার আমার মনকে টানতে লাগল। মনে পড়ল পরীরানীর কাছে আর একটা বর নিতে হবে। আমি মায়ের কাছেই ফিরে আসব কিন্তু তার আগে আর একবার কাকমশাই আর সব পাখিদের কাছে বিদায় নিয়ে আসি । আমায় উড়তে দেখে পাখিগুলো ভারি আশ্চর্য হবে, আমাকে হয়তো তাদের রাজা করতে চাইবে কিন্তু মাকে আমি ছেড়ে যাব না। এইসব ভাবতে-ভাবতে কখন আমি জানলা দিয়ে বেরিয়ে একেবারে দূরে চলে গেছি, তখন আর ফেরবার উপায় নেই, সকাল হচ্ছে। আমি তাড়াতাড়ি জম্বদ্বীপে নেমে পড়লুম। সেখানে আবার সব পুরোনো খেলা নতুন করে খেলতে, নৌকো ভাসাতে, ঘুড়ি ওড়াতে, কত মাস কেটে গেল। সেখান থেকে রাজাবাগান, রায়বাগান সব দেখে আবার পরীর দেশে খাই দাই বাশি বাজাই। তারপর একদিন স্বপ্নে দেখলুম, মা আমার কাদছেন। সেইদিনই আমি রানীর কাছে শেষ বর নিয়ে উড়তে-উড়তে আবার আমাদের বাড়ি চললুম। আবার চোখে পড়তে লাগল, সেই গাছ, সেই নদী, সেই নদীর ধারে আমাদের বাড়ি, সেই বাড়ির এককোণে S& 8 鬱