পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমতলি রিদয় বলে ছেলেট নামেই হৃদয়, দয়ামায়া একটুও ছিল না। পাখির* বাসায় ইছর, গরুর গোয়ালে বোলত, ইহুরের গর্তে জল, বোলতার বাসায় ছুচোবাজি, কাকের ছানা ধরে তার নাকে তার দিয়ে নথ পরিয়ে দেওয়া, কুকুর-ছানা বেড়াল-ছানার ল্যাজে কাকড়া ধরিয়ে দেওয়া, ঘুমন্ত গুরুমহাশয়ের টিকিতে বিচুটি লাগিয়ে আসা, বাবার চাদরে চোরর্কাটা বিধিয়ে রাখা, মায়ের ভাড়ার-ঘরে আমসির হাড়িতে আপশাল ভরে দেওয়া —এমনি নানা উৎপাতে সে মানুষ, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, সবাইকে এমন জ্বালাতন করেছিল যে কেউ তাকে দু’চক্ষে দেখতে পারত না । রিদয়ের মা-বাপ ছিল আমতলি গায়ের প্রজা। দুজনেই বুড়ো হয়েছে। রিদয় তাদের এক ছেলে, বয়স হল প্রায় বাবে বছর ; অথচ ছেলেট না শিখলে লেখাপড়া, না শিখলে চাষবাসের কাজ ; কেবল নষ্টামি করেই বেড়াতে লাগল। শেষে এমন হল যে তার বাপ-মা বাইরে হাটে-মাঠে যাবার সময় রিদমকে ঘরে তাল বন্ধ করে রেখে যেত । তখন শীত গিয়ে গরম পড়তে আরম্ভ হয়েছে। গাছ-গাছে আমের বোল আর র্কাচ-আমের গুটি ধরেছে, পানাপুকুরের চারধার আমরুলি শাকের সবুজ পাতায় ছেয়ে গিয়েছে ; আলের ধারে-ধারে নতুন দুর্বে, আকনফুল সবে দেখা দিয়েছে ; দূরে শালপিয়ালের তেঁতুল-তমালের বনে নতুন পাতা লেগেছে, আর দেখতেদেখতে সমস্ত বন যেন পুরন্ত বাড়ন্ত হয়ে উঠছে ; রোদ পাতায়: পাতায় কাচা-সোনার রঙ ধরিয়ে দিয়েছে ; কুয়াশা আর মেঘ সরে গিয়ে মনে হচ্ছে যেন নীল আকাশের কপাট হঠাৎ খুলে গেছে আর סילצ