পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝোলানো ; পরনে লাল-পেড়ে পাঁচ-আঙুল একটি হলদে ধুতি, গলায় তার চেয়ে ছোটো একখানি কেঁচানো চাদর ; মোটা-সোটা এতটুকু ছটি পায়ে আংটির মতো ছোটাে-ছোটাে ঘুঙুর, গোলগাল হাতে বালা, বাজু, তাড় ; গলা থেকে লাল সুতোয় বাধা ছিটমোড় ছোটো ঢোলকটি ঝুলছে। কথকঠাকুর সমসকৃতে গণেশবন্দনা করতেন : গণেশায় নমঃ নমঃ আদিব্রহ্ম নিরুপম পরমপুরুষ পরাৎপর। খর্ব-স্কুলকলেবর গজমুখ লম্বোদর মহাযোগী পরমসুন্দর ৷ হেলে শুণ্ড বাড়াইয়া সংসার সমুদ্র পিয়া খেলাছলে করহ প্রলয়। ফুৎকারে করিয়া বৃষ্টি পুনঃ কর বিশ্বস্তুষ্টি ভালো খেল খেল দয়াময়। এই বন্দনা শুনে সে গণেশকে মনে করেছিল না-জানি কতই বড়ো ! একেবারে পদভরে মেদিনী কম্পমানা ! মে গির্জনের মতো ঢোল বাজিয়ে —তালগাছের শুড়ির মতো মোটা শুড় দোলাতেদোলাতে, কানের বাতাসে ঝড় বইয়ে গণেশ নেচে বেড়াচ্ছেন! আসলে গণেশ যে গণেশ-দাদা পেটটি নাদ, গলায় একটি ঢোলক বাধা –পিটুলির পুতুলটির মতো একেবারে ছোটাে, ঢোলকটি মাদুলির চেয়ে বড়ো নয়, আর তিনি নিজে তার ইদুরটির চেয়ে একটু ছোটো, এটা রিদয় এই প্রথম দেখলে । রিদয়ের এক-খাচা বিলিতি-ইহর ছিল। না খেতে পেয়ে সেগুলো মরেছে। এখন গণেশের সঙ্গে ইহরটিকে ধরবার ফন্দি সে মনে-মনে আঁটতে লাগল। ঘরের মধ্যে নানা জিনিস ছিল, কোনটা গণেশধরার কাজে লাগে, তাই রিদয় দেখতে লাগল। তার এমন সাহস ছিল না যে গণেশকে গিয়ে চেপে ধরে —যদি দাত ফুটিয়ে দেয় । বাটনাবাট নোড়াটা হাতের কাছে পড়েছিল কিন্তু সেটা ছুড়ে মারলে গণেশ এত ছোটো যে চেপ্টে যাবার ভয় আছে; পিতলের বোকনোট চাপা দেওয়া যায় কিন্তু গণেশকে তা থেকে বার করে খাচায় পোরা মুশকিল; আটাকাঠিটা পেলে ঠিক হত কিন্তু রিদয়ের বাবা সেটা চালের মটকায় তুলে রেখেছেন ; লক্ষ্মীর বাপিট কাজে লাগতে չb Ն