পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোজা হয়ে উঠেছে, পিঠ ধনুকের মতো বেঁকেছে। ল্যাজ ফুলিয়ে কানছটো সটান করে কটমট করে চেয়ে বেড়াল নখে মাটি আঁচড়াতে লাগল । রিদয় বেড়াল দেখে ভয় পাবার ছেলে নয়। যেমন সে তেড়ে বেড়ালকে ধরতে গেছে, অমনি বেড়াল ফাচ করে হেঁচে এক থাপ্পড়ে রিদয়কে উল্টে ফেলে তার বুকে দুই পা দিয়ে চেপে বসে দাত-খিচিয়ে বললে –‘আবার বজাতি! এখনো বুঝি শিক্ষা হয়নি ? বুড়ো-আংল কোথাকার! জানিস, এখন নেংটি ইদুরের মতো তোকে ঘাড়-মটকে খেয়ে ফেলতে পারি ? বেড়াল যে ইচ্ছে করলে এখনি নখ দিয়ে তার বুকটা চিরে, দাত দিয়ে তার কান ছুটি কেটে নিতে পারে, তা বাঘের মতো বেড়ালের নিজ-মূর্তি দেখে রিদয় আজ বেশ বুঝলে। সে নিজে যে আজ কত ছোটো হয়ে গেছে, তাই ভেবে রিদয়ের চোখে জল এল । চোখে জল দেখে বেড়াল বিদয়কে ছেড়ে দিয়ে বললে –‘ব্যাস । আজ এইটুকু শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দিলুম —তোর মায়ের অনেক নিমক খেয়েছি। আজ দেখিয়ে দিলুম তোর জোর বেশি, না আমার জোর বেশি ! আর কখনো পশুপাখির সঙ্গে লাগতে যাসনে —যাঃ ! বাঘের মাসি বেড়াল চারপায়ে দাড়িয়ে একবার গা ঝাড়া দিয়ে ল্যাজটা বুড়োআঙুলের মতো হবার রিদয়ের মুখের সামনে নেড়ে আবার ভালোমানুষটির মতো আস্তে-আস্তে হেঁসেলের দিকে চলে গেল । রিদয় লজ্জায় মাথা হেঁট করে আস্তে-আস্তে গোয়াল-বাড়িতে গণেশকে খুজতে চলল । ধলা গাই, কপলে গাই, কালো গাই—তিন গাই গোয়ালে বাধা। রিদয় কাছে আসতেই এই তিন গাই এমনি দাপাদাপি হামাহামি শুরু করে দিলে যে মনে হল তিরিশটা ষাড় সেখানে হুটোপাটি লাগিয়েছে ! রিদয় শুনলে ধলা বলছে —‘হবে না ? মাথার উপর ধর্ম আছেন। স্থই ' ' - কপলে গাই বললে—“আমার কানে বোলতা ছাড়া ? ইছ ?

38