পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছাপিয়ে দেবে নিচে বড়ে-বড়ো করে লিখে —‘আমতলিতে এই অবতারটি নষ্টামির ফল পেয়েছেন —ইনি দ্বিতীয় কালাপাহাড়, হিন্দুকুলকলঙ্ক ? হয়তো বা কোনোদিন আলিপুরের চিড়িয়াখানায় নতুন জানোয়ার বলে টিকিট-মারা খাচায়, নয়তো তেলে ভেজে যাদুঘরের র্কাচের সিন্দুকে চাবি দেওয়া হবে। রিদয় আর ভাবতে পারলে না, দুই হাতে মুখ ঢেকে র্কাদতে লাগল। আর সে মানুষের ছেলেদের সঙ্গে খেলতে পাবে না, সবাই তাকে দেখলে যক বলে সরে যাবে, কেউ তার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবে না, আর এই ঘর-বাড়ি —রিদয় তাদের বাড়ির দিকে চেয়ে দেখলে ৷ খড়ের চাল ছোটোছোটো তিনখানি থাকবার ঘর ; তার চেয়ে ছোটে রান্না-ঘরখানি ; তার চেয়ে ছোটো গোয়াল-ঘর ; টেকিশাল, ধানের মরাই, আর এতটুকু সেই পুকুর ; তার চারিদিকে চারটিখানি শাক-সবজী। রিদয়দের বাড়ি নেহাত সামান্ত-রকমের, কিন্তু তা হলেও এই সামান্ত জমিটুকু —ক’খানি ঘর, হাসপুকুর, বঁাশঝাড়, তেঁতুল-গাছটি নিয়ে কী সুন্দরই ঠেকল ! যেন একখানি ছবি ! অথচ এই বাড়ি ছেড়ে কতবার রিদয় মনে করেছে পালাবে ; আজ কিন্তু সেই বাড়ির দিক থেকে তার চোখ আর ফিরতে চায় না! দিনটি আজ আমতলি গ্রামখানির উপর, তাদের এই ঘর কখানির উপর কী আলোই ফেলেছে! চারদিক ঝকঝক করছে, ঝুরঝুর করছে ! পাখি গাইছে, ভোমরা উড়ছে, বাতাস ছুটেছে, নদী চলেছে –কলকল, কুল-কুল, ফুরফুর চারদিক আজ উল্‌সে উঠেছে, কেবল মাঝে বসে রয়েছে রিদয়—একলাটি মুখ-চুন করে। সে ভাবছে, কোথায় যাবে — কী করবে ? সে যক্‌ হয়েছে, মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক উঠে গেছে। গণেশের অভিশাপে এখন অন্ধকার পাতালপুরীতে সাপের সঙ্গে যক হয়ে থাকা ছাড়া আর কী উপায় আছে ? গণেশের সন্ধান করে শিবের বাড়ি কৈলাস-পর্বত পর্যন্ত যদি তাকে হেঁটে যেতে হয়, তাও স্বীকার, কিন্তু পাতাল-পুরীতে সে কিছুতে যেতে পারবে না ! এই প্রতিজ্ঞ করে রিদয় কোমর-বেঁধে উঠে দাড়াল ! এই সময় S令曾