পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ল্যাজের পালক পর্যন্ত রুপোর মতো শাদা হয়ে গেছে ; মাথাটা, যেন চুনের হাড়ি ; পা-দুটো যেন চ্যালা-কাঠ —বাকী, ফাটা চট ; ডান-হুটাে যেন দুখান ঝরঝরে বঁাশের কুলো ; ঠোঁট ভোতা ; গলা ছিনে-পড়া; কিন্তু চোখ এখনো জোয়ান হাসের চেয়েও ঝকঝকে — যেন আগুন ঠিকরে পড়ছে ! চক দেখলে খোড়া পাশ কাটাবার চেষ্টায় আছে, সে এগিয়ে এসে বুক-ফুলিয়ে খোড়াকে বললে – ‘আমি কে, জানো তো ? আমার নাম –চক-নিকোবর । আর এই আমার ডাইনের হাস দেখেছ, ইনি আমার ডান-হাত বললেও চলে, এর নাম পাপড় নানকৌড়ি। এই আমার বঁ-হাত, এর নাম নেডোল-কাটচাল । তারপর ডাইনে হলেন লালসেরা আণ্ডামানি ; বায়ে হলেন –চোক-ধলা ডানকানি । তারপরে পাটাবুকে হামস্ত্রি, মারগুই চপড়া, তিরশুলী আকায়ব, স্বনী-শিব বাঙাল ধনমানিকের কাওয়াজি, রাবণাবাদের রাজহাস, রায়-মঙ্গলার ঘেংরাল, চবিবশ-পরগনার সরাল। আরো ডাইনেবায়ে দেখে। —লুসাই, তিব্বতি, তাতারি — এমনি সব বড়ো বড়ো খেতাবি হাস —কেতাবে যাদের নাম উঠেছে! আমরা কি যার-তার সঙ্গে আলাপ করি, না যাকে-তাকে দলে ভিড়তে দিই ? আমাদের সঙ্গে যদি ওঠা-বসা করতে চাও তো পষ্ট করে ওই বুড়ো আংলাটির গাইগোত্তর পদবী-উপাধি বলো, নয় তো নিজের পথ দেখো : চকার দেমাক দেখে রিদয় আর চুপ করে থাং-তে পারলে না ; সে বুক-ফুলিয়ে এগিয়ে এসে বললে –‘আমার নাম ছিল –ছিযুক্ত রিদয়নাথ পুততুগু, ফুলুরী গাই, কাশুপ গোত্র –পুষ্ঠ্যিপুত্র ; ডিহি বাখরগঞ্জ, মোকাম আমতলি –হাসপুকুর, তেঁতুলতলা । জাতে আমি মানুষ ছিলেম, সকলে এখন – আর বলতে হয় না ; মানুষ শুনেই চক-নিকোবরের দল দশ-হাত পিছিয়ে গিয়ে গল বাড়িয়ে খ্যাক-খ্যাক করে বললে –‘যা ভেবেছি তাই! সরে পড়। মানুষ আমরা দলে নিইনে। ভারি বজাত তারা ? খোড়া হাস আমতা-আমতা-করে বললে –‘এইটুকু মানুষ, ওকে く>。