পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খোড়া হাসটি যুদ্ধ। রিদয় তাদের একবার ডাক দিলে, কিন্তু এত উপর দিয়ে ইসেরা চলেছে যে তার ডাক শুনলে কি-না বোঝা গেল ন। —উড়তে-উড়তে আকাশে মিলিয়ে গেল। রিদয় স্থির করলে হাসের নিশ্চয়ই দেখেছে শেয়ালে তাকে খেয়েছে। সে হতাশ হয়ে আকাশে চেয়ে রইল। কিন্তু এত তুখেও সকালের আলো আর বাতাস, সে যেখানটিতে বসে আছে সেই ডালটি সোনার রঙে রাঙিয়ে ঝাউ-পাতার মধ্যে দিয়ে চুপিচুপি তাকে এসে বলতে থাকল —‘ভয় কী ? দিন হয়েছে —সূর্য উঠেছেন, আমরা থাকতে কিসের ভয় । ঠিক সেই সময় কমলা-লেবুর রঙের সাজ পরে হলুদবর্ণ যে সূর্য আমতলির মাঠে রোজ-রোজ রিদয়কে দেখা দিতেন, তিনি চাদপুরের জঙ্গলের উপরে দেখা দিলেন। বেলা প্রায় এক প্রহর | রিদয় গাছের উপরে, শেয়াল নিচে বসে আছে, হাসের দলেরও কোনো খবর নেই, যে-যার খাবার সন্ধানে বেরিয়ে গেছে। ঠিক যখন বেলা ন’টা, তখন দেখা গেল, বনের মধ্যে দিয়ে একটিমাত্র হাস, যেন উড়তেই পারছে না, এই ভাবে আস্তে-আস্তে চলেছে। খেকশেয়ালী অমনি কান খাড়া করে হাসের দিকে নাক উঠিয়ে পায়ে-পায়ে এগিয়ে চলল। হাসটা শেয়ালকে দেখেও দেখলে না, তার নাকের সামনে দিয়েই উড়ে চলল। হাসটাকে ধরবার জন্যে শেয়াল একবার ঝম্বফ দিলে, হাস অমনি ফিক করে হেসে, উড়ে গিয়ে চড়ায় বসল । এর পরেই আর-এক হাস ঠিক তেমনি করে আরো-একটু মাটির কাছ দিয়ে উড়ে চলল ; শেয়ালটা লাফ দিলে ; তার কানের রোয়াগুলি হাসের পায়ে ঠেকল, কিন্তু ধরতে পারলে না –হাওয়ার মতো হাস উড়তেউড়তে চড়ার দিকে চলে গেল। একটু পরে আর-এক-হাস —এট। যেন উড়তেই পারছে না –একেবারে মাটির কাছ দিয়ে ঝাউগাছের গা-ঘেষে উড়ে চলল। এবারে প্রাণপণে শেয়াল ঝঙ্ক দিলে । ধরেছে, এমন সময় হাস সে-করে তার দাতে পালক বুলিয়ে দিয়ে একেবারে মুখের মধ্যে থেকে পালিয়ে গেল। এবার যে এল, যে २९१