পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হংপাল ঝাউ-গাছের উপর থেকে খোড়া হাস ঠোটে-করে রিদয়কে বাগদীচরের থেকে একটু দূরে নালমুড়ির চরে নামিয়ে দিয়ে সারাদিন বুনে হাসের দলের সঙ্গে শেয়ালকে নিয়ে ঝল্পটি আর দাতকপাটি খেলে বেড়াচ্ছে । ক্রমে সন্ধে হয়ে এল দেখে রিদয় ভাবছে, নিশ্চয়ই হাসের রাগ করে তাকে ফেলে গেছে, এখন কেমন করে সে বাড়ি যায় ? আর কেমন করেই বা ঐ বুড়ো-আংলা চেহারা নিয়ে বাপমায়ের সঙ্গে দেখা করে ? ঠিক এই সময় মাথার উপর ডাক দিয়ে হাসের দল উড়ে এসে নালমুড়িতে ঝুপঝাপ পড়েই জলে নেমে গেল। চরে নেশষ্ট কাছিমের ডিম, রিদয় তারি একটা ওবেলা, একটা এবেল খেয়ে পেট ভরিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ল। এমনি সে-রাত কাটল । ভোর না হতে হাসের দল রিদয়কে নিয়ে আবার চলল । রিদয় দেখলে হাসের তাকে বাড়ি যাবার কথা বললে না । সেও সে-কথা চেপে গিয়ে চুপচাপ খোড়া হাসের পিঠে চুপটি করে উঠে বসল। লুসাই হাসের ডানাটা শেয়ালের কামড়ে একটু জখম হয়েছে, কাজেই বুনো হাসের দল আজ আর বেশি দূরে উড়ে গেল না। গোবর-তলির মাটির কেল্লা ‘মুড়িয়া ক্যাসেলের উপরটায় এসে দেখতে লাগল, সেখানে মানুষ আছে কিনা। সেখানে শিকে-গাথা ফাট-চটা কতকগুলো মাটির সঙ, পরী, সেপাই –এমনি সব । বাগানে মালি নেই, মালিকও নেই, কেবল একটা ভাঙা ফটকের মার্বেল-পাথরে কালি-দিয়ে-দাগ সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে। —পালদিং অফ মুড়িয়া ঠিক তারি নিচে একটা ভাঙা পিপের মধ্যে বসে একটা রোগ, কানা দেশী কুকুর পোড়ে কেল্লায় পাহার দিচ্ছে । גS9