পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বে ঠাকুরের ভোগ মালপোগুলো কেবলি পুড়ে যাচ্ছে কেন, সেই ভাবনাতেই রয়েছে। ওদিকে উঠোনের বাইরে বেড়ার গায়ে কাঠবেড়ালির খাচাটার দিকে কী হচ্ছে, কেউ দেখছে না। চাষার দিদিম বুড়ি, সে আর নড়তে পারে না, দাওয়ায় মাছর পেতে বসে সেই কেবল দেখছে—রান্নাঘরের আলো গিয়ে ঠিক কাঠবেড়ালির খাচার কাছটিতে পড়েছে, আর সারা-সন্ধ্যে কাঠবেড়ালিটা খাচার মধ্যে খুটখাট ছটফট করে বেড়াচ্ছে। এই খাচার পাশেই গোয়াল, তার কাছেই সদর দরজা –খোলা। বুড়ি পষ্ট দেখলে বুড়োআঙুলের মতো একটি মানুষ উঠোনে ঢুকল। যক দেখলে ধনদৌলত বাড়ে, বুড়ি সেটা জানে, কাজেই বুড়ো-আংলাকে দেখে সে একটুও ভয় পেলে না। বুড়ো-আংলা বাড়িতে ঢুকেই কাঠবেড়ালির খাচাটার দিকে ছুটে গেল ; কিন্তু খাচাটা উচুতে ঝুলছে ; কাছে একটা পাকাটি ছিল, বুড়ো-আংল৷ সেইটে টেনে খাচায় লাগিয়ে সিড়ির মতো সোজা কাটি-বেয়ে খাচায় চড়ে খাচার দরজা ধরে খোলবার চেষ্টা করতে লাগল। বুড়ি জানে খাচার তালা বন্ধ, সে কাউকে না ডেকে চুপ করে দেখতে লাগল –কী হয়। কাঠবেড়ালি বুড়েআংলার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে কী যেন বললে ; তারপর বুড়ো-আংলা কাট-বেয়ে নিচে নেমে চোচা দৌড় দিলে বনের দিকে। বুড়ি ভাবছে যক্ আর আসে কিনা, এমন সময় দেখলে বুড়ো-আংলা ছুটতে-ছুটতে আবার খাচার কাছে দৌড়ে গেল –হাতে তার ছটাে কী রয়েছে। বুড়ি তা দেখতে পেলে না, কিন্তু এটুকু সে পষ্ট দেখলে যে বুড়ো-আংলা একটা পোটলা মাটিতে রেখে, আর-একটা নিয়ে খাচার কাছে উঠল ; তারপর এক হাতে খাচার কাটি ফাক করে জিনিসটা খাচার মধ্যে গলিয়ে দিয়ে, মাটি থেকে অন্য জিনিসটা নিয়ে আবার তেমনি করে খাচায় দিয়ে, দৌড়ে বেরিয়ে গেল । বুড়ি আর চুপ করে বসে থাকতে পারলে না, সে ভাবলে, যকৃ বোধ হয় তার জন্তে সাত-রাজার ধন মানিক-জোড় রেখে পালাল । Sev