পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পর্যন্ত এখানে টিকতে পারেনি, কত লোক যে এখানে ঠাণ্ড আর রাতের বেলায় ভূতের ভয়ে কেঁপে মরেছে তার ঠিক নেই। এখানে এককালে গোর-বারিক ছিল কাণ্ডেল জাদরেল সব এখানে থাকত, এখন আর কেউ নেই। কোথায় গেছে তাদের বাগ-বাগিচা বাজারশহর, কেবল দেখ চারদিকে আগুন-জ্বালাবার চুলোগুলো পড়ে আছে, শীতে সব গোরা ভূতবেরিয়ে এই-সব ভাঙাচুলির ধারে বসে আগুন পোহায় আর মদ খায়, হুঙ্কা-হুয়া গান গায় ? ঠিক এই সময় শেয়াল-ডাকের মতো গান শোনা গেল, আর মেম সঙ্গে একটা গোরা বোতল হাতে টলতে-টলতে আসছে দেখা গেল। ভালুককে দূর থেকে দেখেই গোরা যেমন বন্দুক উচিয়েছে, অমনি ভালুক চট করে গাছের তলায় অন্ধকারে কালোয়কালো মিশিয়ে গেছে | রিদয়ের গায়ে টকটকে মোজা—মেম তাকে ভাবলে কার পোষা ছোট বাদর, সে অমনি ‘মাংকি-মাংকি’ বলে রিদয়কে ধরতে ছুটল। রিদয় তাড়াতাড়ি যেমন পালাতে য়াবে অমনি পাহাড় থেকে গড়াতে-গড়াতে একেবারে কার্ট রোডে মাল-বোঝাই ছোটো রেলের ছাতে এসে চিৎপাত । রেলট ঝরনা থেকে হেঁাস-ফেঁাস করে খানিক জল ইঞ্জিনে ভরে নিয়ে ঘুম জোড়বাংলার দিকে এগিয়ে চলল ভকভক করে বকতে-বকতে। এদিকে ভালুকের কাছে খবর পেয়ে হাসের উড়েছে ঠিক রেলের সঙ্গে-সঙ্গে—তারা দেখছে, রিদয় মালগাড়ির উপরটায় যেন একটি লাল নিশেনের মতো লটপট করছে। ঘুম বস্তিতে এসে রেল থামল। হাসের অমনি হাক দিলে –‘ঘুম লেক যাও তো নেমে পড় । কিন্তু তখন গাড়ির বাকানিতে রিদয়ের ঘুম এসেছে, সে হাত নেড়ে জানাল –‘দাৰ্জিলিঙ যাব।’ এই সময় গাড়ির মধ্যে থেকে একপাল ছেলে চেচিয়ে উঠল –‘টু সোনাদা ঘুম ? রিদয় চমকে উঠে দেখলে গাড়ি ছেড়েছে। ঘুমের পরেই বাতাসিয়া নতুন লাইন খুলছে –এক-একটা পাহাড় কেটে সেগুলো কেল্লার বুরুজের মতো পাথরের টালি দিয়ে १{२