পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৃথিবী গড়তে বসলেন। চন্দ্র সূর্য গড় হয়েছে, এইবার সসাগর আমাদের এই ধরা তিনি গড়তে আরম্ভ করলেন। সেদিনটাও এমনি আঁধার-আঁধার ছিল। বিশ্বকৰ্মার আর কাজে মনই যাচ্ছে ন, তিনি কাদা নিয়ে কেবলি পৃথিবীটার উপরে বুড়ে আঙুলের টিপ দিয়ে এদেশ-সেদেশ গড়ে চললেন, সন দেশ মিলিয়ে দেশবিদেশগুলোর চেহারাটা হল ঠিক যেন হাডিডসার –এখানে-ওখানে মাটি-ঝরা শিরা-বারকরা বাকা-চোরা টোল-খাওয়া দোমড়ানো চোপসানো গরু, ঘাড় ঝুকিয়ে সমুদ্রের জল খাচ্ছে আর ঠিক তারি সামনে একটা গরুড় পক্ষীর ছানা সেও যেন গো-ডিম থেকে সবে বার হয়ে মাছ ধরবার জন্তে সমুদ্রের দিকে গলা বাড়িয়েছে! বিশ্বকৰ্মারু পাশে বিশ্বামিত্র বসেছিলেন ; তার বিশ্বাস, বিশ্বকৰ্মার চেয়ে গড়ন-পিটন করতে তিনি পাকা । বিশ্বকর্মীর সঙ্গে বাজি রেখে প্রায়ই বিশ্বামিত্র এটা-ওটা গড়তেন, প্রত্যেক বারে বাজিও হারতেন কিন্তু তবু তার বিশ্বাস গেল না যে বিশ্বকৰ্মার চেয়ে তিনি পাকা কারিগর। বিশ্বকর্মার ছিণ্ঠি মিষ্টি আতা খেয়ে বিশ্বামিত্র এক আতা গড়লেন, দেখতে বিশ্বকৰ্মার আতার চেয়েও ভালো কিন্তু সাগরের জল দিয়ে গড়বার কাদা ছানার দরুন বিশ্বামিত্রের আতা এমনি নোনা হয়ে গেল যে মুখে দেবার যে নেই। ডিম ফুটে পাখি বেরোচ্ছে বিশ্বকর্ম ছিষ্টি করলেন, পাখিদের মা-বাপ — তাদের ডিম, ডিমের মধ্যে বাচ্চ —বিশ্বামিত্র বললেন, ‘ও কী হল ? এ কী আবার একটা ছিষ্টি ! আমি গাছে পাখি ফলব।’ বিশ্বামিত্র অনেক মাথা ঘামিয়ে অনেক অঁাক-জোক কষে স্থির করলেন–ডিমে তা দেওয়া চাই কিন্তু পাখি তা দিলে তো চলবে না –তিনি এমন নারকোল গাছ সুপুরি গাছ তাল গাছ ছিষ্টি করলেন যাতে দিন ভোর রোদ পায়, কিন্তু বেশি রোদ পেলে ডিম একেবারে সিদ্ধ হয়ে যাবে, আবার রাতে হিম পেলেও নষ্ট কবে, জল পেলে পচে যাবে! সব ভেবে-চিন্তে বিশ্বামিত্র বড়ো-বড়ো পাখির পালকের মতো পাতা গাছের আগায় বেঁধে দিয়ে সেই পাতার গোড়ায় দশটা বারোটা Հé>