পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুড়িটা পচিশটা করে ছোটে-বড়ো নানা রকম ডিম ঝুলিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন কখন পাখি বার হয়, কিন্তু পাছে কাগে চিলে ঠুকরে ডিমগুলো ভেঙে দেয় সেজন্য বিশ্বামিত্র ডিমের খোলাগুলো এমনি শক্ত করে বানিয়েছেন যে বাচ্চ পাখি সেই পুরু নারকোল মালা নারকোল ছোবড়া তালের খোলা সুপুরির ছাল ভেঙে বার হতেই পারলে না। কোনোটা রোদে পঙ্ক কোনোটা অর্থপক কোনোটা অপঙ্কই রয়ে গেল। ডিম হল, তার শাস জল হল, তা দেওয়া হল, সবই হল, কিন্তু তা থেকে পাখি হল না ! এতেও বিশ্বামিত্রের চৈতন্য হল না। বিশ্বকর্মাকে গোরূপ পৃথিবী গড়তে দেখে তারও গড়বার সাধ হল। তখন বিশ্বকর্ম গোরূপা পৃথিবীর বাটের মতো এই ভারতবর্ষটি অতি যত্ন করে গড়ছেন, সব তখনো গড়া হয়নি কিন্তু এতেই মনে হচ্ছে এই দেশটি হবে চমৎকার, একেবারে কামধমুর বঁাটের মতো দেশটি —যা চাই যত চাই এখানে পাওয়া যাবে। বিশ্বামিত্র তাড়াতাড়ি একটু কাদা নিয়ে বসে বললেন, ‘দাদা তুমি খানিক এই দেশটার গড়ে, আমিও খানিক গড়ি—দেখা যাক কার ভালো হয় । বিশ্বকৰ্ম ভারতবর্ষের আদড়াটা প্রায় শেষ করেছিলেন কাজেই বিশ্বামিত্র খারাপ করে দিলেও দেশটা একেবারে মাটি হয়ে যাবে না জেনে উপরে ৰিশ্বামিত্রকে গড়া পেট করতে দিতে বিশ্বকর্ম। আপত্তি করলেন না। র্তাকে সমস্ত উত্তর দিকটা গড়তে ছেড়ে দিয়ে নিজে বাঙলাদেশটা গড়তে বসে গেলেন। বাঙলা দেশটা সুন্দর করে নদী গ্রাম ধানখেত সুন্দর বন আম কাঠালের বাগান খড়ের চাল দেওয়া ছোটো-ছোটো কুঁড়ে ঘর দিয়ে চমৎকার করে সাজিয়ে তুলতে বিশ্বকৰ্মার বেশি দেরি লাগল না, বুড়ো আঙুলের দু’চার টিপ দিয়ে মাঠগুলো আর আঙুলের দাগ দিয়ে নদী-নালা বানিয়ে তিনি কাজ শেষ করে বসে বিশ্বামিত্রের দিকে চাইলেন । বিশ্বামিত্র অমনি বলে উঠলেন —“আমার কাজ অনেকক্ষণ শেষ হয়েছে, দেখবে এস।” বিশ্বকৰ্মার ছিষ্ট বাঙলাদেশ দেখে বিশ্বামিত্র এবারে নিন্দ করতে &もo