পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নেবার আছে ? চকাকে কঙ্ক শুধোলেন —“তোমরা কোন পথে কামরূপ যেতে চাও? ব্রহ্মপুত্রের পথে গেলে অনেক ঘুরে যেতে হবে, আর আমার সঙ্গে যদি সিধে রাস্তায় যেতে চাও তো এখান থেকে তরস নদী একবেল, সেখান থেকে জলপাইগুড়ি বক্সাও কুচবেহার হয়ে জয়িন্তী আর একবেল, সেখানে রাত কাটিয়ে মোচু নদীতে জল খেয়ে গোয়ালপাড়া দশটার মধ্যে, সেখানে থেকে বেলা পাঁচটায় মানস নদী, ছটা নাগাদ কামরূপ কামাখ্যার মন্দির—সেখানে ব্রহ্মপুত্রের মধ্যে হাড়গিলের চরে আমার দাদা থাকেন। চকা কঙ্ক-পাখির কথায় সায় দিয়ে তরসার পথেই বায়ে হিমালয় পাহাড় রেখে সোজা পুৰ্বমুখে কামরূপে রওনা হল। খানিক উড়েই চকা বুঝলে কঙ্ক-পাখির সঙ্গে বেরিয়ে ভালো করেনি। তার নাম যেমন কঙ্ক চলাও তেমনি বঙ্ক, মোটেই সোজা নয়। সে শিলিগুড়ি ছেড়েই দক্ষিণমুখে চলল, মহানদীর ধার দিয়ে জলপাইগুড়ি স্টেশন হয়ে তিতলিয়া পর্যন্ত, সেখান থেকে উত্তরপুবে বেঁকে কুচবেহার ঘেষে বার্ণিশ-ঘাট, তারপর তিস্তানদীর উপর দিয়ে একতে-বেঁকতে উত্তর মুখে রামসাই হাট হয়ে বোগরা কুঠি, একেবারে পাহাড়তলিতে উপস্থিত, এখান থেকে সেখান থেকে পাহাড়ের বাকে-বাকে পুবে মাদারী পর্যন্ত । সেখান থেকে তরসা নদীর স্রোত ধরে দক্ষিণে এসে একেবারে কুচবেহারের রাজবাড়ির উপরে এসে পড়া, সেখান থেকে আবার উত্তর, আলিপুর বক্সাও জয়ন্তী একেবারে জলপাইগুড়ি পরগণার পুব মোহড়ায় মোচু নদীতে হাজির। এর পরেই গোয়ালপাড়া আরম্ভ । এইভাবে এদিক-ওদিক একোণ-ওকোণ এপাড়া-ওপাড়া যেন কী খুঁজতে-খুজতে কঙ্ক-পাখি তীরবেগে চলেছে। তার সঙ্গে উড়ে চল। হাসদের সম্ভব নয়, কাজেই চকা নিজের পথ দেখে হাক দিতে দিতে চলল— ‘তরসা— তরস। ওদিকে যেমন কুঁকড়ে, এদিকে তেমনি উত্তর থেকে দক্ষিণমুখো যে সব নদী চলেছে, তারি ঘাটে-ঘাটে কাদাখোচা জলপীপী ঘাটিয়াল হাক দিচ্ছে — ‘তরস পশ্চিমকুল মাদারি ? ३४r¢