পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজবাড়িতে নিমন্ত্রণ দিত। কোনো দিন বা নিজের বীরত্ব আর বাহাঙ্কুরি দেখাতে শিকারের সময় প্রায়ই সঙ্গে নিত। টোড় সব বুঝত,কিন্তু বুঝেও বোবা হয়ে থাকত। ফেনচুগঞ্জের নীলকর সাহেব যদিও অনেককাল হল কুঠিবাড়ি ছেড়ে গেছে, কিন্তু এখনো কোনো কাকের এমন সাহস হয় না যে সে দিকে যায়, কিন্তু ডরাকাক বলে ডোমকাকের দল যাকে তুচ্ছ করছে সেই কাকটি গিয়ে একদিন কুঠি-বাড়ির মধ্যে যাবার একটি রাস্ত। করে এল নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে একলা গিয়ে, কিন্তু খবরটা সে কাউকে জানায়নি। একে মানুষ তাতে গোরা, তার ঘরে সুড়ঙ্গ কাটা, বাঘের ঘরে ঘোগের বাসার চেয়েও অসমসাহসের কাজ, কোনো কাক এ পর্যন্ত যা পারেনি ঢোড়া সেই কাজটা করেছে —অথচ মুখে তার কথাটি নেই, অন্ত কাক হলে চিৎকারের চোটে কাকচিবে মাত করত। নতুন দলপতি ডোমকাকটা দিনের বেলায় এই বুকে পাটকিলে ডোর টানা ধোড়াকাককে ভয় করে খাতির করে চলত, ধোড়ার বুকের লাল ডোরা দেখে তার মনে হত যেন কতকালের মহাযুদ্ধের রক্তের দাগ রাজটিকের মতো এখনো এর বুকে দাগ। রয়েছে । কিন্তু রাতে অন্ধকারে যখন লাল-কালো সব এক হয়ে গেছে তখন ডোমকাক ধোড়াকে জ্বালাতন করতে ছাড়ত না – একদিন প্রায় মেরেই ফেলেছিল । সেইদিন থেকে ধোড়া ব৷ টোড়াকাক শেওড়া গাছে আর ঘুমোতে যেত না, সেই সার্সি দিয়ে চুপিচুপি ঘরের মধ্যে গিয়ে দেওয়ালের গায়ে বেলা আড়াইট বেজে বন্ধ হওয়া একটা ঘড়ির পিছনে বসে রাত কাটাতে আরম্ভ করলে । রিদয় যে ঝড়ে পড়ে যোগী-গোফার আশ্রয় নিয়েছিল সেই ঝড়ে কাকচিরার বহুকালের পুরোনো শেওড়া গাছটা গোড়া মুদ্ধ উপড়ে রাজ্যের ডোমকাকের বাসা ডিম ছানা-পোনা নিয়ে উল্টে পড়ল ঠিক বেলা আড়াইটাতে । বাসা গেল, ডিম ভাঙল, তাতে কাগেদের বড়ো একটা দুঃখ হল না, কিন্তু গাছের গোড়াটা যেখানে উল্টে পড়ে বড়ো একটা গর্ত দেখা দিয়েছে, সেই গর্তটায় কী আছে না আছে খুজে రిశి :