পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোনালি মুখের সামনে শুনিয়ে দিলে যে জগতের সবাই যাকে ভালোবাসে এমন কুঁকড়োয় তার দরকার নেই! সে বেছে বেছে সেই কুঁকড়োকে বিয়ে করবে যার নাম-যশ কিছুই থাকবে না ; থাকবার মধ্যে থাকবে যার মনমোনালিয়া বনের টিয়া একমাত্র মুরগি । কুঁকড়ে খানিক চুপ করে থেকে বললেন, ‘একবার গোলাবাড়ির চার দিক দেখে আসবেন চলুন।" বলে তিনি সোনালিয়াকে খুব খাতির করে সব দেখাতে লাগলেন। প্রথমেই, যেটা থেকে অজ্ঞান হয়ে পড়লে সোনালিয়ার মুখে চোখে জল ছিটিয়ে কুঁকড়ে তাকে বাচিয়েছিলেন সেই টিনের গামলাটা আর যে কাঠের বাক্সটায় সোনালিয়াকে লুকিয়ে রেখে তন্মার চোখে ধুলো দিয়েছিলেন সেই ছুটে জিনিস দেখিয়ে বললেন, ‘এগুলো নতুন কিনা, কাজেই কুচ্ছিৎ ; কিন্তু পুরোনো দেয়াল, ভাঙা বেড়া, ফাট দরজা, পুরোনো ওই মুরগির ঘরটি আর কতকালের ওই লাঙল, ধানের মরাই আর ওই শেওলায় সবুজ খিড়কির দুয়োর আর পানাপুকুর আর ওই কুঞ্জলতার থোকা-থোকা ফুল, কী সুন্দর এগুলি । সোনালিয়া কোনোদিন তো ঘরকন্নার ব্যাপার দেখে নি, সে কেবলি কুঁকড়োকে শুধোতে লাগল, এ-সব নতুন জিনিসের মধ্যে থাকায় কোনো ভয় নেই তো ? কুঁকড়ে তাকে বললেন, 'আমরা বেশ নির্ভয়ে আছি –মোরগ মুরগি হাস এবং মানুষ । কেননা, এবাড়ির কর্তা –তিনি নিরামিষ খান, কাজেই আগু বাচ্ছা নিয়ে আমাদের মুখে থাকবার কোনো বাধা নেই। ওই দেখুন-না, বেড়াল পাচিলের উপর ঘুমিয়ে আছে, আর ঠিক তার নিচেই আমার সবছোটো বাচ্ছাটা খেলে বেড়াচ্ছে গাদা গাছটার তলায় । ইতিমধ্যে চড়াইট চট করে কখন চিনে-মুরগিকে সোনালিয়ার খবরটা দিয়ে ফুডুৎ করে উঠোনে এসে বসল। সোনালিয়া শুধোলেন, ইনি ? চড়াই অমনি উত্তর দিলে, ইনি একমাত্র চিনে-মুরগিকে আপনার শুভ আগমন জানিয়ে এলেন । তিনি আপনার সঙ্গে দেখা করতে এলেন বলে। কুঁকড়ে পরিচয় দিলেন, ইনি তল-চটকমশায়, সর্বদ వ4