পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাড়াতাড়ি পাছে খোড এসে দেখে সেই ভয়ে লম্ফ দিয়ে চোচা চম্পট। খোড়া বেশি দূর যায়নি, দু-ঢোক জল খেয়েই ফিরে আসছে, পথের মধ্যে রিদয়ের সঙ্গে দেখা ! রিদয় তাড়াতাড়ি খোড়াকে বললে –‘কোথায় ছিলে সবাই যে চলে গেল, সারারাত তোমাকে খোজাখুজি করেছি, চলে আর দেবি নয়, এই বেল গিয়ে তাদের ধরি, বেশি দূরে এখনো যায়নি ' ' খোড়া আমতা-আমতা করে বললে –‘রোসো, এখনি যেতে হবে ? এত শিগরি কি না গেলেই নয় ? রিদয়ের ভয় হল পাছে খোড়া গিয়ে দেখে বালিহাস মরে গেছে । সে তাড়াতাড়ি খোড়ার পিঠে চেপে তাকে ওড়াবার চেষ্টা করতে লাগল ! খোড়া ঘাড় নেড়ে বললে –‘দেখ ভাই আমার এক বন্ধু বড়ো বিপদে পড়েছে, তাকে একলা ছেড়ে যাওয়া তো হতে পারে না, বেচারার ডানাটি জখম হয়েছে নড়তে পারে না, আমি গেলে তাকে কেবা খাওয়ায় আর কেই বা যত্ন করে ? রিদয়ের ইচ্ছে হাস সেদিকে না যায়, সে কেবলি তাকে ফেরাতে চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু খোড়ার মন পড়ে আছে সেই রূপকথার রাজকন্যের মতো সুন্দরী বালিহাসের দিকে, সে রিদয়কে নিয়ে একবার উত্তরমুখে উড়ল, কিন্তু খানিক পথ গিয়েই বললে –‘ভাই, বড়ো মন কেমন করছে, মানস সরোবরের এই নাটবাড়ির চালায় দু-চাবদিন কাটিয়ে চল বাড়িমুখে হওয়া যাক, দেশে যাবার জন্তে মন টেনেছে আর ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগছে না।’ রিদয়েরও মনটা সকাল থেকে দেশের দিকেই টানছিল, সে কোনো কথা কইলে না । খোড়া হাস আস্তে-আস্তে উড়ে এসে আবার নাটবাড়ির ধারে নামল ঠিক বেছে-বেছে সেইখানটিতে, যেখানে তার বালিহাস রয়েছে। খোড়া রিদয়কে পিঠ থেকে নামিয়ে গল উচু করে হবার ডাক দিলে –‘বালি ও বালি । কোনো উত্তর এল না, তারপর ছুটে গিয়ে দেখলে পাথরের মধ্যে 'LLL