পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুম্‌ হয়ে রইল গোয়ালিনীর তিনি মুখ বুজি। শুয়ে পড়ল ঘড়ির কাছটাতে গোয়ালিনী মুখ গুজি । সত্যিই সেদিন ছুটল মৃত্যুবাণ —আর উঠল না রাজার গোয়ালিনী, নিত্য দুধের দিতে যোগান, সাজতে তেনার মিটে পান । আজকাল সে মানুষ আর নেই, গোবিন্দ গোয়ালার নাতজামাই। হয়ে গেছে ঠিক –বেঠিক ছিল মাথা যেটুক। ঘড়ি ঠিক সময়ে করে টিক্‌টিক-ভোর পাঁচটায় তাড়া লাগায় নিয়মিত —রাজবাড়িতে পৌছে দাও গা খাটি দুধ । নয়তে দেউড়ির দেয়ালে লোহার গজালে আছে ভৈরব দেয়ানের শংকর মাছের চাবুক। হয় না যেন সময়ের এদিক ওদিক । রাত নয়টার ভয়ট গিয়ে ঠেকেছে ভোর পাচটায়। আচমকা চমকান ঘোষের পো –ভাবেন, হায়, হায়, কোথায় রইল আমার প্রতিপদের চাদ, ছাবন মাসটায় হল অস্তমিত । ঘোষের পো এখন চলেছে ঘড়ির বশে —ওঠ বললে ওঠে, বোস বললে বসে, খা বললে খাওয়া চোকায়, শো বললে শোয় হয় খাটিয়াতে আলসে। ঘোষের পো-তে ঘোষালের পো-তে মাঝে মাঝে ঘড়িটা নিয়ে কথা হয়। ঘোষালের পো বলে, ঘড়িটাতে তাহলে তোমার ভূতপূর্বার আত্মাপুরুষ ঢুকেছে নিশ্চয় –ওটারে আর ঘরে রাখা নয় ঘোষের পে বলে, ইস্তির পুরুষ আত্মা, এটা কি কথা একটা—থাক ঘড়ি বেচার কথাবার্তা। ও সেই থাক ঘড়ির ভিতর –বিক্রয়ের নামও ওর সামনে আর করা নয় । র্তাতির পো, হাজরা পাড়ায় তার বাড়ি, বুনে আনলে শাড়ি গুলবাহারি, শুনলে এসে অশুভ খবর –শাড়ি যে পড়বে সে-ই নাই। ৰললে, তবে ফিরে যাই । ঘোষের পো বললে, তা কি হয় ভাই : বায়নার শাড়ি নেওয়াই চাই, রেখে যাও ঐ ঘড়িটার পর। তাতির মুখে শুনলে ঘোষজ, এ শাড়ির যোগ্য আছে একটি ৩৬৭