পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-জন্তু। কিন্তু আগেই তার কথা বেরিয়ে পড়ল, ওই কুকুরটার সঙ্গে অত,তার ভাব বলেই কুঁকড়োটাকে ছচক্ষে আমি দেখতে পারি নে।’ পেরু বললেন, যাকে সেদিন জন্মাতে দেখলেম সে আজ কর্তা হুয়ে উঠল, এটা আমি কিছুতেই সইব না। এইজন্তে আমার রাগ ওটার উপর । রাজহাস বললে, “ওর পা দুখান বড়ে বিস্ত্রী, একেবারে হাসের মতো নয়। দেখলেই আমার মাথা গরম হয়ে ওঠে, গোড়ালির ছাপ তো নয়, চলবার বেলায় মাটির উপরে বাবু যেন তারাফুল কেটে চলে যান। কী দেমাক। কেউ বললে, কুঁকড়োর চেহারাটা ভালো বলেই সে তাকে পছন্দ করে না। কেন সে নিজে কুচ্চিত হল কুঁকড়োটা হল না ? আর কেউ কেউ বললে, সব ক-টা গির্জের চুড়োতে তার সোনার মূর্তি দেখলে কার না গা জ্বালা করে। নিশ্চয়ই ও পাখিটা কিস্টান । ওকে জাতে ঠেলাই ঠিক । মোচলমানের সঙ্গে এক ঘটিতে জল খেতে আমি ওকে স্বচক্ষে দেখেছি । ওর কি বাচবিচার আছে । ওর,ছায়া মাড়াতে ভয় হয়।’ ঠিক সেই সময় ঘড়ি পড়ল আর ঘড়ির মধ্যে কলের পাখি বলে উঠল, “পি-পি-পি-রা-আ-আ-লি।’ মেঘের আড়াল থেকে চাদ অমনি উকি দিলেন। উঠোনের এক কোণে খানিক আলো পড়ল। ছুচো আস্তে আস্তে মুখ বার করে পেচাকে বললে, “আমার সে পাজিটার সঙ্গে কোনোদিন চোখেচোখিই নেই।” ঘড়িকলের পাখিটাকে আর শুধতে হল না ; সে আপনিই বললে, ‘একটুতে আমার দম ফুরিয়ে যায়, রোজ দম না দিলে মুশকিল, আর কুঁকড়োর দমের শেষ নেই।’ বলেই গলা ঘড় ঘড় করে ঘড়িপাখি ছুপ করলে। টং টং করে আটটা বাজল । পেচার সব ডানা মেলে বললে, আর আমরা কুঁকড়োকে একটুও ভালোবাসি নে, কেননা –কেননা ও কিনা –সে কিনা বলতে বলতে অন্ধকারের মধ্যে পেচার উড়ে পড়লনীল রাত্রির মধ্যে। weg