পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চাদ্বনি কোনো গায়ে এক ব্রাহ্মণ আর এক ব্রাহ্মণী ছিলেন। দিঘির ধারে তাদের বাড়ি ছিল। গোয়ালে ছধওয়ালা গরু ছিল, গোলায় ধান ছিল, পুকুরে মাছ ছিল। সবই ছিল। . কিন্তু তবুও তাদের মনে মুখ ছিল না। কারণ র্তাদের একটিও ছেলে নেই। ব্রাহ্মণী অনেক রকম ব্রত করলেন—যেসব ব্রত করলে কাতিক গণেশের মত ছেলে পায়, যাতে রাজার মা হয়, ছেলে হাতি ঘোড়া চড়ে, সোনার খাট পালঙ্কে বসে –কিন্তু ব্রাহ্মণীর সকল ব্রতই বিফল হল । শেষে এক সাধুর কথামত চান্দ্রায়ন করে পূর্ণিমা রাতে এক সোনার চাদ মেয়ে হল ". তার নাম রাখলেন চাদনি, পাড়ার লোকে দেখে বললে –মেয়ে নয় তো, চাদের কণা ;– চাদনিকে কোলে পেয়ে ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণীর আনন্দের সীমা রইল না। ব্রাহ্মণী চাদনিকে বড়ো আদরে, বড়ো যত্নে মানুষ করতে লাগলেন । চাঁদনি যখন খুব ছোট, যখন সে ভাল করে চলতে শেখেনি, যখন সে ভাল করে বলতে শেখেনি, কচি মুখে মিষ্টি কথা আধ-আধ ফুটেছে, সেই সময় আকাশে চাদ উঠলেই চাদনি বড়োই চঞ্চল হয়ে উঠত, আর ছাতে যাবার জন্য বায়ন করত-চাদনির মা তাকে কিছুতেই আর ঘরে রাখতে পারতেন না-চাদনিক্ষে কোলে নিয়ে ছাদের উপর এসে চাদের আলোয় ঘুম পাড়াতেন। চাদনি চাদ দেখতে দেখতে মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়ত আর ঘুমের ঘোরে বলত ‘চাদ, চাদ । মা বলতেন— ‘চাদ কোথা পাব বাছা জাদুমণি। মাটির চাদ নয় গড়ে দেব, গাছের চাদ নয় পেড়ে দেব, তুই চাদের শিরোমণি, ঘুমে রে খুকুমণি ॥ . 88%