পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চাদনি চাদামামার গান শুনতে শুনতে অকাতরে ঘুমিয়ে পড়ত। তার চাদমুখে চাদের আলো পড়ত, মনে হত যেন ঠিক ফুলের উপর চাদের আলো পড়েছে। তারপর চাদনির যখন পা হল, যখন সে এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াতে শিখলে, তখন প্রতিদিন চাদনি তার মায়ের হাত ধরে দিঘির ধারে যেত। মা তার গা ধুতে জলে নামতেন, চাদনি ঘাটে বসে দেখত দিঘির কালো জলে চাদের ছায়া ভাসছে—যেন একখানা রূপার থাল-চাদনি বলত—‘মামা ঐ চাদ ধরে দে’—ম বলতেন— ‘চাদ কোথা পাব বাছা জাদুমণি, ' মাটির চাদ নয় গড়ে দেব, গাছের চাদ নয় পেড়ে দেব, তুই চাদের শিরোমণি। ঘরে চু, আমার খুকুমণি ॥ বলতে বলতে চাদনির হাত ধরে দিঘির ধার দিয়ে ঘরে ফিরতেন, চাদের আলো চাদনির চাদ মুখে পড়ত ঝাউবনের আড়াল দিয়ে, খেজুর পাতার ফঁাক দিয়ে। ক্রমে চাদনির বয়স হল, ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণী তার বিয়ের জন্য ভাবতে লাগলেন। মনের মতে বর-চাদনির উপযুক্ত—কোথাও পাওয়া গেল না। ব্রাহ্মণী কাদতে লাগলেন, ব্রাহ্মণ বরের সন্ধান করতে লাগলেন। শেষে এক বর জুটল, তার অনেক পয়সা কিন্তু দেখতে কালো। —ব্রাহ্মণ পয়সার লোভে সেই কালো বরের সঙ্গে চাদনির বিয়ে স্থির করলেন । চাদনির মা মেয়ের গলা জড়িয়ে কাদতে লাগলেন, কাদতে কাদতে অনেক রাত্রে ঘুমুলেন। চাঁদনি সেই রাত্রে খানিক বাদে উঠে চুপি চুপি ঘর ছেড়ে বনে চলে গেল। সকালে আর তার সন্ধান পাওয়া পেল না । ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণী চতুর্দিকে চাদনিকে খুঁজে –কাদতে কঁাদতে ঘরে ফিরে এলেন । রাতে ব্রাহ্মণী স্বপ্নে দেখলেন—যে এক জটাজুটধারি ঋষি এসে বলছেন, ‘ব্রাহ্মণী তুই কাদিম নে। চাদনি চাদের 38to