পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সকালে আমার কান কেটেছিস ; তার শাস্তি ভোগ কর। এই বলে রাজার দুই গালে ছুটে চড় মেরে একটা কান ছিড়ে দিয়ে চলে গেল । রাজা যাতনায় অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। অনেকক্ষণ পরে যখন জ্ঞান হল, তখন রাজা চারিদিকে চেয়ে দেখলেন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, হুনুমানটা কোথাও নেই, মন্ত্রীবর পড়ে-পড়ে নাক ডাকাচ্চেন। রাজার এমনি রাগ হল যে তখনি মন্ত্রীর বাকিকানটা এক টানে ছিড়ে দেন ; কিন্তু আমনি নিজের কানের কথা মনে পড়ল, রাজা দেখলেন ছেড়া কানটি ধুলায় পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি সেটিকে তুলে নিয়ে সযত্নে পাতায় মুড়ে পকেটে রেখে, তাজ টুপির সোনার জরির ঝালর-কাট কানের উপর হেলিয়ে দিলেন যাতে কেউ কাটা কান দেখতে না পায়, তারপর মন্ত্রীর পেটে গুতো মেরে বললেন –‘ঘোড়া আন ।” এক গুতোয় মন্ত্রীর নাক ডাকা হঠাৎ বন্ধ হল, আর এক গুতোয় মন্ত্রী লাফিয়ে উঠে রাজার সামনে ঘোড়া হাজির করলেন । রাজা কোনো কথা না বলে একটি লাফে ঘোড়ার পিঠে চড়ে একদম ঘোড়া ছুটিয়ে রাজবাড়িতে হাজির । সেখানে তাড়াতাড়ি সহিসের হাতে ঘোড়া দিয়েই একেবারে শয়ন-ঘরে খিল দিয়ে পালঙ্কে আবার অজ্ঞান হয়ে পড়লেন । সকাল হয়ে গেল, রাজবাড়ির সকলের ঘুম ভাঙল, রাজা তখনও ঘুমিয়ে আছেন। রাজার নিয়ম ছিল রাজা ঘুমিয়ে থাকতেন আর নাপিত এসে দাড়ি কামিয়ে দিত, সেই নিয়ম মত সকাল বেলা নাপিত এসে দাড়ি কামাতে আরম্ভ করলে এক গাল কামিয়ে যেই আর এক গাল কামাতে যাবে এমন সময় রাজা দুর্গা তুর্গা’ বলে জেগে উঠলেন । নজর পড়ল নাপিতের দিকে, দেখলেন নাপিত ক্ষুর হাতে ই করে দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ কানে হাত দিয়ে দেখলেন কান নেই।. রাজা আপসোসে কেঁদে উঠলেন। কাদতে কঁাদতে নাপিতের হাতে ধরে বললেন –নাপিত ভায় এ কথা প্রকাশ কর না। তোমাকে অনেক ধনরত্ন দেব। নাপিত বললে—‘কার মাথায় হটাে কান যে এ কথা প্রকাশ করবে। শুনে রাজা খুশি হলেন । নাপিতের কাছে 86 X