পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর-আধখানা দাড়ি কামিয়ে তাকে হু-হাতে স্থ-মুঠে মোহর দিয়ে বিদায় করলেন। নাপিত মোহর নিয়ে বিদায় হল বটে কিন্তু তার মন সেই কাটা কানের দিকে পড়ে রইল। কাজে কর্মে, ঘুমিয়ে জেগে, কী লোকের দাড়ি কামাবার সময়, কী সকাল কী সন্ধ্য মনে হতে লাগল-রাজার কান কাটা, রাজার কান কাটা ; কিন্তু কারুর কাছে এ কথা মুখ ফুটে বলতে পারে না-মাথা কাটা ষাবে। নাপিত জাত সহজেই একটু বেশী কথা কয়, কিন্তু পাছে অন্য কথার সঙ্গে কানের কথা বেরিয়ে পড়ে সেই ভয়ে তার মুখ একেবারে বন্ধ হল। কথা কইতে না পেয়ে পেট ফুলে তার প্রাণ যায় আর কি ! এমন সময় একদিন রাজা নাপিতের কাছে দাড়ি কামিয়ে সোনার কেটে খুলে কাট কানটি নেড়ে-চেড়ে দেখছেন, আর অমনি কোথেকে একটা কাক ফস করে এসে ছো মেরে রাজার হাত থেকে কানটি নিয়ে উড়ে পালাল। রাজা বললেন —‘হঁই। হা ধরে ধরে । কাক কান নিয়ে গেল। তারপর রাজা মাথা ঘুরে সেইখানে বসে পড়লেন। ভাবতে লাগলেন, প্রজাদের কাছে কী করে মুখ দেখাব । এদিকে নাপিত ক্ষুর ভাড় ফেলে দৌড়। পড়ে-তো-মরে এমন দৌড়। শহরের লোক বলতে লাগল –‘নাপিত ভায়া নাপিত ভায়৷ হল কী ? পাগলের মতো ছুটছ কেন ? নাপিত না রাম না গঙ্গা কাকের সঙ্গে ছুঠতে ছুটতে একেবারে অজগর বনে গিয়ে হাজির। কাকটা একটা অশখ গাছে বসে আবার উড়ে চলল, কিন্তু নাপিত আর এক পা চলতে পারলে না, সেই অশখ গাছের তলায় বসে পড়ে হাপাতে লাগল, আর ভাবতে লাগল – ‘এখন কী করি ? রাজার কান কাটা ছিল, তখন অনেক কষ্টে সে কথা চেপে রেখেছিলুম ; এখন সেই কান কাকে নিলে এ কথাও যদি আবার চাপতে হয় তাহলে আমার দফা একদম রফা ! ফোলা পেট এবারে ফেঁসে যাবে এখন করি কী ? নাপিত এই কথা ভাবছে এমন সময় গাছ বললে –‘নাপিত ভায়া ভাবছ কী ? নাপিত বলল—‘রাজার কথা ? 感 8¢ ३