দাতন-কাটি রামপাখিটার দিকে ছুড়ে বললে –‘কুঁকড়োটার গলা দেখ, যেন বঁাদিদের ধমকাচ্ছেন নবাৰ খাঞ্জা খা । —ধমকাচ্ছে কি রাম নাম করছে, কেমন করে বুঝলে খুদিরাম ? —‘আজ্ঞে, মোচলমানের পাখি রাম নাম করে কখনো ? কুঁকড়ে। তখন দাতন-কাঠিটার দিকে ঘাড় বাকিয়ে “ডিষ্ঠ তিষ্ঠ' বলছে-লাল বোট দুলিয়ে । খাতাঞ্চিমশায় শব্দের দিকে কান পেতে বললেন—‘পাখিটা কৃষ্ট বলছে না খৃস্ট চলছে কিছু বোঝবার জো নেই।” এমন সময় জোরে জোরে কুঁকড়ো ডাকল –‘অ-লা-হু য়া! —‘পাখিটা হালুয়া খেতে চেঁচাচ্ছে হে বিশ্বেস | —‘আজ্ঞে না, বলে খুদিরাম ঘাড় নাড়লে। কুঁকড়োটা প্রথমে বললে –ধুপ উঠাহু, রোদ উঠেছে। দাতন-কাঠিটা পড়তে বাচ্চাক-টা সেদিকে ছুটল দেখে বলল —ইষ্টক তিষ্ট । এখন বললে আকাশের দিকে দেখে—আল হুয়া, আলো হয়েছে।’ খাতাঞ্চিমশায় বিস্ময়-বিস্ফারিত চোখে খুদিরামের দিকে চেয়ে বললেন —“আমার বিশ্বাস ছিল তুমি একটি — মুখে এল –গাধা গরু, কিন্তু সামলে বললেন –‘বানর ' খুদিরাম কাছাটা একহাতে কোমরে জড়ায়। খাতাঞ্চিমশায় গামছায় মুখ মুছতে মুছতে বললেন —‘এখন বুঝেছি তোমার পেটে শকুন-বিষ্ঠে আছে, সাধন করলে কালে ফুরণ পেতে পারে।’ ক্ষুদিরাম ভয়-স্তিমিত নেত্রে খাতাঞ্চিমশায়ের দিকে চেয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। র্কাদে কাদো হয়ে বললে –‘খাতাঞ্চিমশায়, সোনাতন দেশে গিয়ে অবধি সমানে খাটচি, খাতা ঝাড়চি, তলপি বইচি, মুরগি রাধচি –আপনি শেষকালে এমন কথাটা বললেন – তোর পেটে শকুনি পড়েচে ? —‘কী আপদ! বলি খুদিরাম, তুমি কুঁকড়োর কথা বুঝলে আর আমার কথাটার বেলায় উলটো-বুঝলি-রাম করে ফেললে। আমি দেখতে পাচ্ছি তোমার পেটে পিলে-চাপা শকুন-বিদ্যে রয়েছে। ●・br