পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিলে সর্টু সরে গেল। ত্রিসত্য বাবাজী সত্য না অসত্য কিছুই বুঝতে দিলে না - তিনবার হাম্বারব দিয়ে ত্রিসত্য বাবাজীর তে-রঙা গাভীটি মাঠে মাঠে ঘাস খেতে খেতে আগালে। পায় পায় যেদিক যায় গাভী, সেদিকে যায় হেতি হোতি ফুটে কুড়তে কুড়তে। গরু তিন পা চলে এক পা দাড়ায়। হেতি হোতিও দাড়িয়ে দেখে, গরু মাটির কাছে মুখটি নামাচ্ছে আর মাটি ফুড়ে ঘাস উঠে আসছে তার মুখে । এই না দেখে হেতি বলে হোতিকে —‘আয় না ভাই, আমরাও অমনি করে ঘাস খাই ।” কিন্তু মাটিতে মুখ ঠেকাতেই খুদি পিপড়ে দেয় নাকে কৃামড়। ঘাস খাওয়া আর হয় না দুজনার। নাকে আসে ভিজে মাটির ভুরভুরে গন্ধ, মুখে কিন্তু কিছুই আসে না । মাঠের পারে ছোটে। নদীটি হেতি হোতির এই ঘাস খাওয়া দেখে খিল খিল করে হেসে গড়িয়ে পড়ে বললে –“তোরা কি গরু যে ঘাস খাবি ? আয় আমার কাছে, জল খাবি আয় ।” গরু আগে নামে জলে। মুখ নামিয়ে জলের মধ্যে জল খায় চকু-চকু করে। তারপর ঘাসে জলে একপেট ভর্তি হলে বলে –‘বা । হেতি হোতি গরুর দেখাদেখি তেমনি করে জলের ভিতর মুখ ডুবিয়ে জল খেতে যায়, নাকে মুখে ঢুকে পড়ে জল কলকল করে। হেঁচে কেসে উঠে পড়ে হেতি হোতি ডাঙায় । হেতি বলে হোতিকে —'ছুত্তোর, আমরা কি গরু যে জল খাব ? হোভি বলে –“ঐ দ্যাখে কাদাখোচা –কেমন মজা করে কাদা খুঁচে খাচ্ছে। ওরও দু-পা, আমাদেরও কু-পা । এই বলে দু-জনে ঘ-থার কাদা তুলে নিয়ে মুখে ভরে দিলে। কাদার সঙ্গে দু-দশ কুড়ি ঘুসো চিংড়ি চলে গেল তাদের পেটে। গরু তেরচ চোখে হেতি হোতির দিকে চয়ে বললে –‘এরে বলে চিংড়িহাটার ঘোল। রাতের মতো পেট ভরে খেয়ে নাও । এই বলে চক্ষু বুজে ঘুমোয় আর স্বাজ নাড়ে গরু। «Հ8