পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিয়ে দাড়ালেন। নীল আকাশের গায়ে যেন আঁকা সেই কুঁকড়োকে কী সুন্দরই দেখাতে লাগল। সোনালি মনে মনে বললে, ‘একে কি অবিশ্বাস করতে পারি।” এইবার কুঁকড়ে সোজা হয়ে দাড়ালেন, গায়ের রঙিন পালক বাড়া দিয়ে। সোনালি দেখলে, তার মাথার মোরগ-ফুলটা যেন আগুনের শিখার মতে রগরগ করছে। পুব দিকে মুখ করে কুঁকড়ে ডাক দিলেন, ফ-জী-ই-ই-র ফ-জী-র'. সোনালি শুনলে কুঁকড়ে যেন পুব আকাশকে হুকুম দিলেন, কাজ শুরু করো', আর অমনি মাটির হুকুম কাজের সাড়া সকালের বাতাসে অনেক দূর পর্যন্ত ছুটে গেল, ভোর ভয়ি ভো-র ভ-য়ি হাকতে হাকতে। তার পর সোনালি দেখলে কুঁকড়ে যেন সব কাদের সঙ্গে কথা কইছেন, বাদল বসন্তের চেয়ে দুদণ্ড আগে তোমার আলো এনে দেব ভয় নেই।’ সোনালি দেখলে তিনি একবার মাটির কাছে মুখ নামিয়ে একবার ও-ঝোপ এ-ঝোপের দিকে মুখ ফিরিয়ে কখনো ঘাসগুলির পিঠে ডান বুলিয়ে কত কী বলছেন, যেন সবাইকে তিনি অভয় দিচ্ছেন আর বলছেন, ‘দেব, দেব, আলো দেব, রোদ দেব, হিম আঁধার ঘুচবে, ভয় কী ভয় কী।’ অণুপরমাণু ধুলোবালি তারা–কুকড়োর কানে কানে কী বলে গেল, কুঁকড়ে ঘাড় নেড়ে বললেন, ‘দোলন চাই, আচ্ছ, দোলনা দিচ্ছি, সোনার সে দোলন বাতাসে বুলবে, আর অণু পরমাণু মিলে লাগবে ঝুলোন দে দোল দোল, দে, দোল দোল ’ সোনালি দেখলে আকাশ আর মাটির মধ্যে ঝোলানো পাতলা নীল অন্ধকার একটু একটু তুলছে আর দেখতে দেখতে ভোরের শুকতার যেন ক্রমে নিভে আসছে। সোনালি বললে, ‘দিনের আলো দেবার আগে সব তারাগুলোকে বড়ো যে নিভিয়ে দিচ্ছ, এককে নিভিয়ে অস্তকে আলো দেওয়া, এ কেমন ? কুঁকড়ে একটু হেসে বললেন, একটি তারাও আমি নিভিয়ে ফেলি নি সোনালি, আলো জালাই আমার ব্রত, দেখো এইবার পৃথিবী আলোময় হচ্ছে, রাত্রি দু-উ-উ-র ইল দেখতে দেখতে।' সোনালির চোখের সামনে নীলের উপর 'st e