পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাতে ছেড়ে দিয়ে থাকেন ? আল্লাউদ্দীন মহা ভাবিত হয়ে দরবার ছেড়ে উঠে গেলেন। সেই দিন শেষ রাত্রে চিতোরের উপরে কেল্লার খোলা ছাদে পদ্মিনী গালে হাত দিয়ে এক দাড়িয়ে ছিলেন । নীল পদ্মের মতে র্তার দুটি সুন্দর চোখ, পাঠান শিবিরের দিকে— যেখানে ভীমসিংহ বন্দী ছিলেন, সেই দিকে চেয়ে ছিল । আকাশ তখনো পরিষ্কার হয়নি, পূর্বদিকে সূর্যের আলো সোনার তারের মতো দেখা দিয়েছে, এমন সময় দুজন রাজপুত-সর্দার পদ্মিনীর পায়ে এসে প্রণাম করলেন। একজনের নাম গোরা, আরেকজনের নাম বাদল । গোরার বয়স পঞ্চাশের উপর, আর তার বড়ো-ভাইয়ের ছেলে বাদলের বয়স বছর বারে । গোরা বাদল দুজনেই পদ্মিনীর বাপের বাড়ির লোক । রাজকুমারী পদ্মিনী যখন ভীমসিংহের রানী হয়ে সিংহল ছেড়ে চলে আসেন, তখন তার সঙ্গে এই গোরা এক-হাতে তলোয়ার, আর হাতে মা-বাপ-হর। কচি বাদলকে নিয়ে দেশ ছেড়ে চিতোরে এসেছিলেন । পদ্মিনী জিজ্ঞাস করলেন, “মহারানা কি আমার কথা-মতে কাজ করতে রাজী হয়েছেন ? গোর বললেন, তারই হুকুমে রানীজীকে পাঠানশিবিরে পাঠাবার বন্দোবস্ত করার জন্তে এমনি বাদশার সঙ্গে দেখা করতে চলেছি। পদ্মিনী একটু হেসে বললেন, ‘যাও বাদশাকে বোলে, আমার জন্তে যেন দিল্লীতে একটা নতুন মহল বানিয়ে রাখেন ' গোরা বাদল বিদায় নিলেন । দেখতে-দেখতে সমস্ত পৃথিবী প্রকাশ করে সূর্যদেব উদয় হলেন । পদ্মিনী দেখলেন, আল্লাউদ্দীনের লাল রেশমের প্রকাণ্ড শিবির সকালবেলায় সূর্যের আলোয় ক্রমেক্রমে রক্তময় হয়ে উঠল । তিনি বাদশাহের সেই কানাতের দিকে চেয়ে-চেয়ে বলে উঠলেন—‘ধূর্ত পাঠান, তোতে-আমাতে আজ যুদ্ধ আরম্ভ হল। দেখি, কার কতদূর ক্ষমতা ! সেদিন শুক্রবার, মুসলমানদের জুম্মা। আল্লাউদ্দীন ফসিরের নমাজ করে দরবারে বসেছেন, এমন সময় মহারানার চিঠি নিয়ে Σ Σ ,