পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আয়নার সম্মুখে পাকা দাড়িতে গোলাপী আতর লাগাচ্ছিলেন, ততক্ষণ সেই সাতশো পালকির একখানিতে রানা ভীমসিংহকে লুকিয়ে মেবারের বাছাবাছ রাজপুত-সর্দারেরা পাঠান-শিবিরের মাঝখান দিয়ে চিতোরের মুখে এগিয়ে চলেছেন। ক্রমে আল্লাউদ্দীনের সাজগোজ সাঙ্গ হল । আধ-ঘণ্টা শেষ হয়ে একঘণ্টা পূর্ণ হতে চলল, এখনো পদ্মিনীর শিবির থেকে ভীমসিংহ ফিরে এলেন না ! বাদশা গোরাকে ডাকতে হুকুম দিলেন ; গোরার কোনো সন্ধান পাওয়া গেল না। আল্লাউদ্দীন আর স্থির থাকতে পারলেন না, ব্যস্ত-সমস্ত হয়ে যেখানে আধক্রোশ জুড়ে কানাত খাটানো হয়েছিল, সেইখানে উপস্থিত হলেন ; দেখলেন পদ্মিনীর সোনার চতুৰ্দোল শূন্ত পড়ে আছে। যে লাল মখমলের প্রকাও শিবিরে তিনি চিতোরের রানী পদ্মিনীকে মানিকের খাচায় সোনার পাখিটির মতো পুষে রাখবেন ভেবেছিলেন, সে শিবির অন্ধকার ! কোথায় পদ্মিনী কোথায় তার একশো সখী, আর কোথায় বা বন্দী ভীমসিংহ; পাঠান-শিবিরে হুলস্থল পড়ে গেল! সকলেই শুনলে পালকি-বেহার সেজে রাজপুতেরা বন্দী রানাকে ফাকি দিয়ে নিয়ে গেল । বাদশা তখনি সমস্ত সৈন্য জড়ো করতে হুকুম দিয়ে দুহাজার ঘোড়-সওয়ার সঙ্গে চিতোরের মুখে বেরিয়ে গেলেন। সবেমাত্র রানার পালকি চিতোরের ফটক পার হয়েছে, এমন সময় পাঠান বাদশার ঘোড়-সওয়ার কালবৈশাখীর ঝড়ের মতন ধূলিধ্বজায় চারিদিক অন্ধকার করে দীন-দীন শব্দে রাজপুত সৈন্তের উপর পড়ল । - তখন বেলা দুই প্রহর। আগুনের সমান তপ্ত রৌদ্রে বারো বৎসরের বালক বাদল আর পঞ্চাশ বৎসরের বৃদ্ধ গোরা, একদল রাজপুতকে নিয়ে প্রাণপণে চিতোরের সিংহদ্বার রক্ষা করতে লাগলেন। সন্ধ্যা হয়ে এল, তবু যুদ্ধের শেষ হল না। চিতোর থেকে দলের পর দল রাজপুত এসে যুদ্ধে যোগ দিতে লাগল ; বাদশা Y S 8