পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপর দলে-দলে নিশাচর পাখি কালো ডান মেলে উড়ে বেড়াতে লাগল ! চিতোর হস্তগত হল । পাঠানের তলোয়ার চিতোরের পথঘাট রক্তের স্রোতে রাঙা করে তুললে ; ধনধান্তে, মণিমুক্তায়, লক্ষ-লক্ষ তাতার ফৌজের বড়ো-বড়ো সিন্দুক পরিপূর্ণ হল! কিন্তু যে-রত্বের লোভে আল্লাউদ্দীন আজ অমরাবতীর সমান চিতোর নগর শ্মশান করে দিলেন, যার জন্ত্যে দিল্লীর সিংহাসন ছেড়ে বিদেশে এলেন, সেই পদ্মিনীর সন্ধান পেলেন কি ? বাদশা চিতোরে এসে প্রথমেই শুনলেন— পদ্মিনী আর নেই —চিতার আগুনে সুন্দর ফুল ছাই হয়েছে ! সেইদিন রাত্রে বাদশার হুকুমে চিতোরের ঘর-দ্বার, মন্দির-মঠ —ছাইভস্ম চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল— কেবল প্রকাণ্ড সরোবরের মাঝখানে রানী পদ্মিনীর রাজমন্দির তেমনি নতুন, তেমনি অটুট রইল। আল্লাউদ্দীন সেই রাজমন্দিরে পদ্মসরোবরের ধারে শ্বেতপাথরের বারান্দায়-ঘেরা পদ্মিনীর শয়নমন্দিরে তিনদিন বিশ্রাম করলেন। তারপর মালদেব নামে একজন রাজপুতের হাতে চিতোরের শাসনভার দিয়ে, ধীরে-ধীরে দিল্লীর মুখে চলে গেলেন । পাঠান-বাদশার প্রবল প্রতাপ, হিন্দুস্থানের একদিক থেকে আরএকদিকে বিস্তৃত হল ; আঁর সেই বারে হাজার সতী-লক্ষ্মীর পবিত্র নাম বারে হাজার রাজপুত বীবের কীর্তি, চিরদিনের জন্তে, জগৎ-সংসারে ধন্য হয়ে রইল। আজও চিতোরের মহাসতীর শ্মশানে পদ্মিনীর সেই চিতাকুণ্ড দেখা যায় ; তার ভিতর মানুষে প্রবেশ করতে পারে না— এক অজগর সাপ দিবারাত্রি সেই গহ্বরের মুখে পাহারা দিচ্ছে। )&や