পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মধ্যে দেওয়ালির আলো কোথায় পেলি ? এ কি তোর চিতোর— যে ঘরে-ঘরে লোকে আলো দেবে ? ‘দেখবে এসো না মা’ বলে হাম্বির লছমীরানীকে নিয়ে কেল্লার ছাদে উঠলেন। কার্তিক মাসের অমাবস্তা— কিন্তু আকাশ ছেয়ে তারা ফুটে ছিল ; যেন দেবতারা ফুল ছড়িয়ে গেছেন । রানীমা অবাক হয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছেন । হাম্বির হেসে বললেন, মা, কী চমৎকার বাহার দেখেছ ! কিন্তু এ দেওয়ালি তো দেবতাদের —তোমারও নয় আমারও নয়। এখন একবার কৈলোরের দেওয়ালি —আমার দেওয়ালিরই আলোটা কেমন হয়েছে এদিকে দেখো দেখি!’ রানীমা চেয়ে-চেয়ে দেখলেন– কৈলোরের কেল্লার চারিদিকে পাহাড়ে-পাহাড়ে আলো জলছে ! গ্রামের পথে মাঠে-ঘাটে দিকেদিকে লক্ষ-লক্ষ প্রদীপ, যেন তারার মালা, আলোর জাল ! লছমীরানী অবাক হয়ে হাম্বিরের মুখের দিকে চেয়ে বললেন, ‘এই জনমানবহীন কৈলোরে এত আলো, এত লোক কোথা থেকে এল ? হাম্বির বললেন, “ওই যে পাহাড়ের দিকে দেখছ ওই আলো সব ভীলেরা জালিয়েছে । আর যে গ্রামের দিকে দেখছ এসব গ্রামবাসীদের দেওয়া ’ রানীমা বললেন, ‘এত প্রদীপ, এত তেল, তুই এসব বুঝি চিতোর থেকে আমদানি করলি ? হাম্বির বললেন, “শুধু চিতোর থেকে নয়, সমস্ত মেবার থেকে প্রদীপ আর তেল, প্রদীপ গড়বার কুমোর, তেল যোগাবার তেলিও আমদানি করেছি। ওই দেখো, কুমোর-পাড়ায় মশাল জলছে ; যাত্র শুরু হল । ওই শোনো তামুলি-পাড়ায় ঢোল বাজছে ; এখনি সঙ বার হবে । ওই যে মহাজন পট্টিতে নহবৎ বাজল, তোপখানায় বোমা ফাটল। দেখছ মা, হাম্বিরতালাও ঘিরে ব্রাহ্মণের মেয়েরা কেমন প্রদীপ দিয়েছেন ? লছমীরানী বলে উঠলেন, ‘কী আশ্চর্ষ ; এ যে নগর বসিয়ে ফেলেছিস দেখি ! আমি বলি বুঝি তুই বসে-বসে কেবল ঘুম দিস। ভিতরে-ভিতরে তোর এত বুদ্ধি ? وان 9لا