পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনের অবস্থা বুঝে কেউ আজ সঙ্গে যেতে সাহস পেলে না। সবাই তফাতে-তফাতে রইল। বনের তলায় আঁধার ক্রমে ঘনিয়ে এল, আকাশে আর আলো নেই, এ-সময়ে যখন চারিদিকে বিদ্রোহী ভীল, তখন রানাকে আর বনের মধ্যে একা থাকতে দেওয়া উচিত হয় না ভেবে যখন সব সর্দার বনের দিকে এগিয়ে চলেছেন, সে সময়ে মনে হল যেন অনেকগুলো শুকনো পাতা মাড়িয়ে অন্ধকারে কারা ছুটে পালাল । তারপরেই সর্দারেরা দেখলেন, সেই রক্তের মতো রাঙা ফুলগাছের তলায় রানা মকুল পড়ে রয়েছেন ; বুকের দুই দিকে দুটো বল্লমের চোট দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। রান সন্ধ্যার মাল জপ করছিলেন, এখনে তার ডান-হাতের আগায় মালা জড়ানো । রানার মতে রানা ছিলেন মকুল— মেবারে হাহাকার পড়ে গেল। সবাই বলতে লাগল, এ কাজ সেই দুটি খুড়োর না হয়ে যায় না । মাদেরিয়ার বনে বিদ্রোহীদের কেউ এসে যে রানাকে মেরে যেতে পারে এটা সবাব তাসম্ভব বোধ হল ! পায়ীগ্রাম থেকে একটু দূরে পাহাড়ের উপরে রাতকোটের কেল্লা। সেইখানে এ-গ্রাম সে-গ্রাম ঘুরে চাচা আর মৈর অতি কষ্টে এসে পৌছলেন। ওদিকে মকুলের উপযুক্ত ছেলে রান কুম্ভ, তার সঙ্গে মাড়োয়ারের যোধর ও এসে মিলেছেন ; গ্রামে-গ্রামে পরগণায়পরগণায় তাদের লোক চাচা নৈর— দুই ভাইকে ধরবার জন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পায়ী গ্রাম চিতোর থেকে বহুদূরে । ক’ঘর ছুতোরকামার, জনকতক, জোতদার কিষান, বশির ভাগই রীব-গুর্বে । চাচা আর মৈর দুজন সদার তাদের মধ্যে এসে ভাঙা কেল্লাটা দখল করে ধুমধাম লাগিয়ে দেওয়াতে প্রথমটা তারা খুব খুশি হল। প্রথমপ্রথম দু-একবার তাদের সবারই পাল-পার্বণে কেল্লাতে নিমন্ত্রণ, আনাগোনা ও হল ; কিন্তু যতক্ট টাকার টানাটানি হতে লাগল, ততই দুই সর্দার হান্ গোটাতে লাগলেন। শেষে এমন দিন এল যে তুষ্ট সর্দারের কথা কেউ তার বড়ো একট। মুখেই আনত না । আবার পাহাড়ের উপর ভাঙা কেল্লার দুই বুড়োর নামে নন-রকম 〉br)