পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দফাদার কিন্তু চলেছে। মেয়ের শোকে পাগলের মতো চলেছে; আর ফিরে-ফিরে রাতকোটের কেল্লাটার দিকে তলোয়ার উচিয়ে গালাগালি পাড়ছে ; এমন সময় পথের মধ্যে তিন ঘোড়সওয়ারের সঙ্গে দেখা । কথায়-কথায় দফাদারের মুখে মেয়ে-চুরির খবর শুনে তিনজনেই বললে, ‘চলো, দফাদার-সাহেব, এর জন্তে আর রানার কাছে যেতে হবে না। আমরাই তোমার মেয়েকে উদ্ধার করে সেই দুই বুড়োর দফা-রফ করে আসছি, চলে। ! শুনে দফাদার ঘাড় নেড়ে বললে, ‘চেনো না সেই দুই বুড়োকে, তাই এমন কথা বলছ। মানুষের অগম্য স্থানে থাকে তারা । যদি কেউ সে-কেল্লা মারতে পারে তো রান কুম্ভ ! পাহাড় বেয়ে সেখানে উঠতে হবে— রাস্তা নেই। বনে-জঙ্গলে দিনে বাঘ হাকার দিয়ে ফেরে। কেউ সেখানে যেতে পারে না ; আর গেলেও ফিরতে পারে না এমনি ভয়ানক পাহাড়ের চূড়োয় রাতকোটের কেল্লা! আর তারি মধ্যে রাক্ষসের চেয়ে ভয়ানক দুই বুড়ে বসে ' বলেই দফাদার হাউমাউ করে মেয়ের জন্তে কঁাদতে লাগল। তিন সেপাইয়ের মধ্যে সব-ছোটো যে সেপাই, সে ৰললে, ‘ভয় নেই, আমরা ঠিক সেখানে যাব, চলে এস ’ ছোটে সেপাইয়ের কথা শুনে দফাদার একটু চটে বললে, “আমার কথায় বিশ্বাস হল না ? আমি বলছি, সেখানে যাবার রাস্তা নেই! ছোটাে সেপাই আর কেউ নয়, রান কুম্ভ নিজে। চাচ আর মৈরকে সন্ধান করে শাস্তি দিতে চলেছেন । দফাদারের কথায় রানা হেসে বললেন, ‘কেউ যদি কেল্লায় উঠতেই পারে না, তবে বুড়ো-দুটো তোমার মেয়েকে নিয়ে সেখানে গেল কোথা দিয়ে ? রাস্তা নিশ্চয়ই আছে।" দফাদার আর ও রেগে বললে, ‘ওহে ছোকরা, রাস্ত থাকলে আমি কি সেখানে না উঠে এদিকে আসি ? নিজেই গিয়ে বদমাস দুটোর মাথা কেটে আমার মেয়েকে’— বলেই বুড়ে আবার কঁদিতে লাগল। তিন সেপাই তাকে ঠাণ্ড করে পায়ীগ্রামে ফিরিয়ে আনলেন । গায়ের মধ্যে সামান্ত সেপাই-বেশে দফাদারের সঙ্গে রান কুম্ভ ১৮৪