পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়ে মরবার সময় পেলেন ; তার কপালের লিখন এমনি করে ফলল । জয়মল, সুরজমল, দুইজনেই চিতোরের সিংহাসন আর পৃথ্বীরাজের মাঝ থেকে সরে পড়লেন ; রইলেন কেবল সঙ্গ। একদিন কমলমীরে পৃথ্বীরাজের চর এসে খবর দিলে – সঙ্গ বেঁচে আছেন ; শ্রীনগরের রাজার মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ের উদযোগ হচ্ছে । পৃথ্বীরাজ তখনি নিজের দলবল নিয়ে সঙ্গকে জালে বাধার পরামর্শ করতে বসলেন ; কিন্তু পুর্থীরাজের অদৃষ্টও বসে ছিল না, সে দিনে-রাতে আলোতেঅন্ধকারে সুখে-দুঃখে মিলিয়ে যে বেড়াজাল পৃথ্বীরাজকে ধরবার জন্য বুনে চলেছিল, এতদিনে সেটা শেষ হল। সকালে পৃথ্বীরাজ সেজেগুজে সঙ্গকে ধরবার জন্তে বার হবেন, এমন সময় শিরোহী থেকে পৃথ্বীরাজের ছোটোবোন এক পত্র পাঠালেন। সে অনেক দুঃখের কাহিনী। বিয়ে হয়ে অবধি তার স্বামী তাকে অপমান করছে, লাথি মারছে, ঘরের বার করে দিতে চাইছে । সে নেশাখোর, তুষ্ট এবং একেবারে নির্দয়। বাবা বুড়ো হয়েছেন, এখন দাদা এসে এই অপমানের প্রতিশোধ না দিলে তার ছোটোবোন মারা যাবে । ছোটোবোনের কান্না-ভরা সেই চিঠি পড়ে, পৃথ্বীরাজ চলেছিলেন শ্রীনগরে, বাইরের দিকে তলোয়ার উচিয়ে –কিন্তু যাওয়া হল না, পৃথ্বীরাজের ঘোড়৷ ফিরল শিরোহীর মুখে —বোনকে রক্ষা করতে। অদৃষ্ট টেনে নিয়ে চলল পৃথ্বীরাজকে সঙ্গের দিক থেকে ঠিক উলটাে মুখে —অনেক দূরে ! রাতের অন্ধকারে শয়নঘরের মেঝেয় পড়ে রানার মেয়ে কেবলই চোখের জল ফেলছেন, রানার দেওয়া সোনার খাটে শিরোহীর রাজা ভরপুর নেশায় নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে, হঠাৎ সেই সময় পৃথ্বীরাজ ঘরে ঢুকে এক লাথিতে শিরোহীর রাজাটাকে ভূয়ে ফেলে দাড়ি চেপে ধরলেন । রানার মেয়ে পৃথ্বীরাজের তলোয়ার চেপে ধরলেন, ‘দাদা থামো, প্রাণে মেরো না।’ পৃথ্বীরাজ রেগে বললেন, ‘এত বড়ে ওর সাহস, তোর গায়ে হাত S〉8