পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিসির পালকি চলেছে— ধর কাস্থন্দে, চল বাস্থন্দে, বড় ঝালুন্দে, খোড়া মালুন্দে। পালকির এক দরজা ধরে চলেছে হারুন্দে, আর এক দরজা ধরে চলেছে উড়েদের সর্দার— কালো কিচ কিন্দে । হারুন্দের মাথায় কালে চুলের উচু ঝুটি আর কিচ কিন্দের মাথায় পাকা চুলের শণের মুটি । হারুন্দে ফরসা, কিচ কিন্দে কালো মিশ– যেন বাংলা কালি ! হারুন্দের চুল যেন বালির ওপরে মনসাগাছ— খাড়া-খাড়া, খোচা-খোচা, তার কিচ কিন্দের চুল যেন সমুদরের শাদা ঢেউ– হাওয়ায় লটপট করছে। কিচ কিন্দেব মাঠটাও দেখছি খানিক শাদা, খানিক কালো, খানিক আলো, খানিক অন্ধকার— একদিকে ধপধপ করছে শুকনো বালি আর-দিকে টলমল করছে কালো জল— নুনে গোলা । মাঠ দিয়ে চলছি, না, শাদা-কালো মস্ত একখানা সতরঞ্চির ওপর দিয়েই চলেছি ! আমার বাদিকে কেবল বালি— শাদ। ধপধপ করছে বালি ; আর আমার ডানদিকে রয়েছে কালি-গোল সমুদ্র-কালো— কাজলের মতো কালো, বায়ে চলেছে হারুন্দে—ডাঙার খবর দিতে-দিতে, ডাইনে চলেছে কিচ কিন্দে— জলের আদি-অন্ত কইতে-কইতে । আমি চলেছি পালকিতে শুয়ে মনে-মনে দুজনের দুটো গল্প শাদ! একটা শেলেটের ওপর কালে পেনসিল দিয়ে লিখে নিতে-নিতে । কিচ কিন্দের গল্পটা জলের কিনা তাই সেটা লিখে নিতে-নিতেই ধুয়েমুছে গেছে, একটুও আর পড়া যাচ্ছে না। কিন্তু হারুদের গল্পট। বালির আঁচড়ের মতো একেবারে শেলেটে কেটে বসে গেছে--- ধুলেও যায় না, মুছলেও যায় না— বেশ পষ্ট-পষ্ট পড়া যাচ্ছে । ২৩৫