পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাত নটার সময় চাদ উঠল। অত বড়ো চাদ– এমন পরিষ্কার চাদ হিন্দুস্থান ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। এই চাদনিতে দিল্লির চাদনিচক আলো হয়ে গেছে ; রাস্তায় সব লোক বেরিয়ে হাওয়া খাচ্ছে, গান-বাজনা করছে। মসুর দেখি দিল্লির জুম্মামসজিদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে । ‘দেখছ কি মসুর ? ‘হুজুর, এমন মসজিদ কোথাও দেখিনি।’ ‘তবু মসুর, ওর আধখানা রেল-কোম্পানি ভেঙে উড়িয়ে দিয়েছে ? ওটা কী হুজুর ? ‘ওটা শাজাহান বাদশার কেল্লা । ওখানে একটা দরবার-ঘর আছে, সে দেখলে চোখ ঠিকরে যেত— এত হীরে-মানিক দিয়ে সেট। সাজানো ছিল। সেইখানে ময়ুর-সিংহাসনে বাদশার বসে দরবার করতেন।” ছিল বলছেন কেন হুজুর ? এখন কি সে-সব নেই ? ‘না মসুর, শুনেছি ময়ুর-সিংহাসন নাদির শা কেড়ে নিয়ে কাবুলে চলে গেছে, আর দেয়ালে যে-সব হীরে-পান্না ছিল তা মোগলবাদশার বাড়ি ছাড়বার পর র্কাচ হয়ে গেছে। আসল কথাটা কী জানো মসুর, ও দেয়ালে র্কাচই লাগানো ছিল কিন্তু মোগল বাদশার ভয়ে লোকে বলত সেগুলো হীরে-মানিক ! নইলে অত টাকা গরিব হিন্দুস্থানের বাদশ শাজাহান কী করে পাবে ? এ কি বোগদাদের বাদশা হারুন-অল-রসিদ যে ঘরখানা হীরে দিয়ে মুড়ে ফেললে ? আমি বেশ জানি মসুর, বুড়ো শাজাহান এক তাজমহল আর ময়ুরসিংহাসন তৈরি করতে সব টাকা, যা-কিছু তার বাপ-দাদী জমিয়ে গিয়েছিল, ফুকে দেয়। সেই রাগে তার ছেলে ঔরঙ্গজেব তাকে কয়েদ করে সিংহাসন কেড়ে নেয়— এ আমার উজির জামায়ের নিজের মুখে শোনা, নিজের কানে শোনা, জানো মস্থর—’ মসুর দেখি ঘুমিয়ে পড়েছে ; আমার কিন্তু ঘুম আসছে না, 는 88