পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই আংটি ? তুমি যে বললে আমি তোমায় আংটি দিয়েছি, কই দেখাও দেখি কেমন আংটি ? শকুন্তলা তাড়াতাড়ি আঁচল খুলে আংটি দেখাতে গেল, কিন্তু হায়, আঁচল শূন্ত ! রাজার সেই সাতরাজার ধন এক মানিকের বরণ-আংটি কোথায় গেল ! এতদিনে দুর্বাসার শাপ ফলল। হায়, রাজাও তার পব হলেন, পৃথিবীতে আপনার লোক কেউ রইল না ! মা-গো !—বলে শকুন্তলা রাজসভায় শানের উপর ঘুরে পড়ল ; তার কপাল ফুটে রক্ত ছুটল, রাজসভায় হাহাকার পড়ে গেল । সেই সময় শকুন্তলার সেই পাষাণী মা মেনকা স্বৰ্গপুরে ইন্দ্রসভায় বীণা বাজিয়ে গান গাইছিল। হঠাৎ তার বীণার তার ছিড়ে গেল, গানের সুর হারিয়ে গেল, শকুন্তলার জন্যে প্রাণ কেঁদে উঠল, অমনি সে বিদ্যুতের মতো মেঘের রথে এসে রাজার সভা থেকে শকুন্তলাকে কোলে তুলে একেবারে হেমকূট পৰ্বতে নিয়ে গেল। সেই হেমকূট পৰ্বতে কগুপের আশ্রমে স্বর্গের অন্সবাদের মাঝে কতদিনে শকুন্তলার একটি রাজচক্রবর্তী রাজকুমার হল । সেই কোল-ভরা ছেলে পেয়ে শকুন্তলার বুক জুড়ল । শকুন্তলা তো চলে গেল। এদিকে রাজবাড়ির জেলেরা একদিন শচীতীর্থের জলে জাল ফেলতে আরম্ভ করলে । রূপোলি রঙের সরলপুটি, চাদের মতে পায়রা-চাদ, সাপের মতো বাণমাছ, দাড়াওয়ালা চিংড়ি, কাঠ-ভরা বাট কত কী জালে পড়ল। সোনালি রূপোলি মাছে নদীর পাড় মাছের ঝুড়ি য়েন সোনায় রূপোয় ভরে গেল। সারাদিন জেলেদের জালে কত রকমের কত যে মাছ পড়ল তার আর ঠিকনা নেই। শেষে ক্রমে বেলা পড়ে এল ; নীল আকাশ, নদীর জল, নগরের পথ আঁধার হয়ে এল ; জাল গুটিয়ে জেলেরা ঘরে চলল । ծՎ2