পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেল-চুকচুকে পেট । আঙুলটি গিয়ে কারো গায়ে ঠেকেছে কি আর অমনি সমস্ত পেটটি তেলের মতো গড়িয়ে গিয়ে তার ওপর পড়েছে —যেমন পড়া আর অমনি হজম করে ফেলা! জানোয়ার যদি ওঁর চেয়ে তিন-চার ডবল বড়ো হয় তবে ওই পেটটিও সঙ্গে-সঙ্গে বেড়ে তেলের মতো ছড়িয়ে গিয়ে জানোয়ারটিকে বেশ করে ঘিরে নেয় ! ছুরি দিয়ে পেটট চিরে দেওয়া যায় না কিচ কিন্দে ? হবার জো নেই। ওঁকে দু-টুকরো কর, দশ-টুকরো কর, একশে-হাজার টুকরো কর, দেখবে সব টুকরোগুলো একট-একটা নতুন কালা-কান-আংল-টানা হয়ে আঙুল বার করে ভেসে বেড়াচ্ছে। সমুদুরের ভেতর এর মতো জবরদস্ত আর কেউ নেই বাবু। চলো, এই আংলা-টানার হাভে পড়লে আর রক্ষে নেই।” —বলেই আমরা চুপি-চুপি পালিয়ে চলেছি। এমন সময় দেখি একরাশ চিনেমাটির মার্বেল জলের ভেতর দিয়ে গড়িয়ে চলেছে। কাছে আসতে দেখি—সেগুলি এক-একটি গোল খাচা আর ভেতরে একটি করে খুদে আংলা বসে আছে। ও কিচ কিন্দে, আমাকে চাট্টিখানি ওই মার্বেল ধরে দাও না ? ‘দেখ-না একবার ধরে ? —বলেই খপ করে দুটো মার্বেল ধরেই কিচ কিন্দে আমার দু-হাতে দিয়েছে। যেমন মুঠো করে ধরা আর শুয়োপোকার কাটার মতো হাতময় ছুচ বিধে গেছে ! মার্বেল দুটো ফেলে দিয়ে দু-হাত চুলকোতে-চুলকোতে চলেছি, এমন সময় কিচ কিন্দে বলছে, গামলা-চালা ফোপরা-জালার দেশে এলুম বাৰু ? চেয়ে দেখি চারদিকে কেবল গামলা আর জালা ! কোনোট। বড়ো, কোনোট ছোটো, কোনোট লম্বা, কোনোটা বেঁটে, কেউ ধানের মরাইটার মতে, কেউ ঢাকাই জালাটার মতে, কেউ চুমকি ঘটিটির মতো। কোনো গামলা ফুলের টবের মতো দাড়িয়ে আছে, কোনোট বা গোরুর জাব দেবার ফুটে গামলাটার মতো উপ্টোনে। রয়েছে ! ২৬২