পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোমার ইস্কুলের ছুটি কেটে দিয়েছে, এখন আর তুমি পিসির বাড়ি থাকতে পারবে না, এখন তোমায় গুরুমহাশয়ের পাঠশালে পড়তে হবে আর জোড়া-বেত খেতে হবে। চলো”— বলেই আমাকে পালকিতে ভরে হারুন্দে আর কিচ কিন্দে পাঠশালায় নিয়ে চলল। ‘ওরে আমাকে তোরা ছেড়ে দে, আমি এমন কাজ আর কখনো করব না। ও কিচ কিন্দে, তোর পায়ে পড়ি আমাকে গুরুমশায়ের কাছে দিস্নে, আমি পড়ব না, আমি ছবি লিখব, আমি যাব না পাঠশালে যাব না— আ– অ’ বলে পালকির ভেতর আমি হাত-পা আছড়ে কাদতে লেগেছি। জোড়া-বেতের নাম শুনে ভারি ভয় হয়েছে। হারুন্দে কিচ কিন্দে পালকির দুই দরজা চেপে ধরে আমাকে গুরুর পাঠশালে হাজির করে বলছে— ‘গুরু-মশাই গুরু-মশাই তোমার পোড়ো হাজির । চড়চড়িয়ে পড়ুক বেত হোক বিচার কাজির ॥’ শুনছি গুরুমশায় ঘরের ভেতর থেকে মন্তর পড়ছেন— ‘আয় ধুগড়ি যায় ধুগড়ি ধুগড়ি মস্তর গায়। চড়চড়িয়ে পড়ুক বেত পড়পড়িয়ে যায়।’ যেমন এই মস্তর পড়া আর দেখি জোড়া-বেত নাচতে-নাচতে গুরুমশায়ের ঘর থেকে বেরিয়ে এল । সঙ্গে-সঙ্গে মাছরাঙা গুরু নাকের ওপরে চশমা লাগিয়ে এসে বলছেন, ‘পড়— ‘লিখিবে পড়িবে মরিবে দুখে। মৎস্য ধরিবে খাইবে মুখে ॥ আমার তখন ভয়ে কি পড়া আসে । আমি বলে ফেলেছি— ‘লিখিবে পড়িবে থাকিবে মুখে। মৎস্ত ধরিবে মরিবে দুখে ॥ ՀեrՀ