পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুজা শেষ হয়েছে। রাজ ব্রাহ্মণদের বলছেন– রাজপুত্রের নাম হল কী ? ‘ব্রাহ্মণের বলছেন– এই রাজকুমার হতে পৃথিবীর লোক যত অর্থ, যত সিদ্ধি লাভ করবে— সেইজন্য এর নাম রইল সিদ্ধার্থ ; রাজা হলে এই রাজকুমার জীবনে সকল অর্থ আর রাজা না হলে বুদ্ধত্ব লাভ করে জগৎকে কৃতার্থ করবেন আর মরণের পরে নির্বাণ পেয়ে নিজেও চরিতার্থ হবেন— সেইজন্য এর নাম হল সিদ্ধার্থ। ‘রাজা বলছেন– কুমার সিদ্ধার্থ রাজা হয়ে রাজত্ব করবেন, কি রাজ্য ছেড়ে বনে গিয়ে বুদ্ধত্ব পাবার জন্যে তপস্যা করবেন ? সেই কথা আপনার স্থির করে বলুন। ‘রাজার আট গণৎকার খড়ি-পেতে গণনা করে বলছেন! প্রথমে শ্রীরাম আচার্য, তিনি রাজাকে দুই আঙল দেখিয়ে বলছেন— মহারাজ, ইনি রাজাও হতে পারেন, সন্ন্যাসীও হতে পারেন ঠিক বলা কঠিন, তুইদিকেই সমান টান দেখছি। রামের ভাই লক্ষ্মণ অমনি দুই চোখ বুজে বলছেন– দাদা যা বলেছেন তাই ঠিক । জয়ধ্বজ দুই হাত ঘুরিয়ে বলছেন— হ্যাও বটে, নাও বটে। শ্রীমস্তিন দুইদিকেই ঘাড় নেড়ে বলছেন— আমারও ওই কথা । ভোজ হুই চোখ পাকল করে বলছেন– এটাও দেখছি, ওটাও দেখছি। স্বদত্ত বলছেন, ডাইনে বায়ে ঘাড় নেড়ে– এদিকও দেখলেম, ওদিকও দেখলেম । সুদত্তের ভাই সুবাম দুই নাকে নস্তি টেনে দলছেন— দাদার দিকটাই ঠিক দেখছি। কেবল সবার ছোটো অথচ বিদ্যায় সকলের বড়ে কৌণ্ডিন্য এক আঙল রাজার দিকে দেখিয়ে বলছেন— মহারাজ, এদিক কি ওদিক, এটা-কি ওটা নয়— এই রাজকুমার বুদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনোদিকেই যাবেন না স্থিরনিশ্চয়। ইনি কিছুতেই ঘরে থাকবেন না । যেদিন এর চোখে এক জরাজীর্ণ বৃদ্ধ মানুষ, রোগশীর্ণ দুঃখী মানুষ, একটি মরা মানুষ আর এক সন্ন্যাসী ভিখারী পড়বে, সেদিন আপনার সোনার সংসার অক্ষকার করে কুমার সিদ্ধার্থ চলে যাবেন— সোনার শিকল কেটে পাখি যেমন উড়ে যায়।’ રજ(t