পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একবার যোগাসনে বসুন, জানতে চেষ্টা করুন— দুঃখের শেষ আছে কিনা।’ সিদ্ধার্থ চুপ করে রইলেন। কিন্তু শিষ্যদের কথার উত্তর দিয়েই যেন একটা পাগলা বনের ভিতর থেকে একতারা বাজিয়ে গেয়ে উঠল— ‘নারে! নারে! নাইরে নাই ? কৌণ্ডিন্য বললেন– জানবার কি কোনো পথ নেই প্রভু ? সিদ্ধার্থ বললেন– “পথের সন্ধান এখনো পাইনি, কিন্তু দেখ তার আগেই এই শরীর দুর্বল হয়ে পড়ল, বৃথা যোগেযাগে নষ্ট হবার মতো হল । এখন এই শরীরে আবার বল ফিরিয়ে আনতে হবে, তবে যদি পথের সন্ধান করে ওঠা যায়। নিস্তেজ মন, দুর্বল শরীর নিয়ে কোনো কাজ অসম্ভব । শরীরকে সবল রাখো, মনকে সতেজ রাখে । বিলাসীও হবে না, উদাসীও হবে না। শরীর মনকে বেশি আরামও দেবে না, বেশি কষ্টও সহাবে না, তবেই সে সবল থাকবে, কাজে লাগবে, পথের সন্ধানে চলতে পারবে । একতারার তার যেমন জোরে টানলে ছিড়ে যায়, তেমনি বেশি কষ্ট দিলে শরীর মন ভেঙে পড়ে । যেমন তারকে একবার ঢিলে দিলে তাতে কোনো সুরক্ট বাজে না, তেমনি শরীর মনকে আরামে আলস্তে ঢ়িলে করে রাখলে সে নিস্কর্ম হয়ে থাকে। বৃথা যোগ্যোগে শরীর মনকে নিস্তেজ করেও লাভ নেই, বৃথা আলস্য বিলাসে তাকে নিষ্কর্ম বসিয়ে রেখেও লাভ নেই— মাঝের পথ ধরে চলাই ঠিক ? সেদিন থেকে শিষ্যরা দেখলেন, সিদ্ধার্থ সন্ন্যাসীদের মতো ছাই মাখা, আসন বেঁধে বস, ন্যাস কুম্ভক তপজপ ধুনী ধুনচি সব ছেড়ে দিয়ে আগেকার মতো গ্রামে-গ্রামে ভিক্ষা করে দিন কাটাতে লাগলেন। কেউ নূতন কাপড় দিলে তিনি তাই পরেন, কেউ ভালো খাবার দিলে তিনি তাও খান। শিষ্যদের সেটা মনোমতো হল না । তাদের বিশ্বাস যোগী হতে হলেই গরমের দিনে চারি দিকে আগুন জালিয়ে, শীতের দিনে সারারাত্র জলে পড়ে— কখনো উধ্বর্ণ বাহু হয়ে দুই হাত আকাশে তুলে, কখনো হেটমুণ্ড হয়ে দুই পা סכס\