পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

র্তার হাতে কোনো কাজ নেই অথচ মশাটা বারে বারে ঘুমও ছুটিয়ে নিচ্ছে। হুজুর হাতের কাছের সেই চট-মোড়া বইগুলো একে একে খুলে দেখতে লাগলেন। বইগুলো তার ঠুনকে বাড়ির কারখানা, অদ্ভূত বাগানের বর্ণনায় ভরা। এর মধ্যে একখানা বই— তার মলাটের ছবিটায় তার চোখ পড়ল— সোনার একটি ফুলের ডালে পাখি গাইছে। হুজুর সেই বইখানা খুলে পড়তে লাগলেন— ‘হুজুরের আশ্চর্য পাখির গান। যিনি প্রকাশক তিনি বিদেশের একজন বিখ্যাত ওস্তাদ । বইখানা পড়তে পড়তে নাকের উপরে কচ্ছপের খোলা দিয়ে বাধানো মোতিয়াবিন্দু চশমার বড়ো বড়ো গোল দুখানা পরকলার ভিতর দিয়ে হুজুরের দুই চোখ বিস্ময়ে ক্রমে বড়ো হয়ে উঠছে বেশ দেখা গেল । বাড়ির প্রধান কর্মচারী যিনি কাজের খবরের চেয়ে হুজুরের মেজাজ কখন কেমন তারই খবর ভালো করে রাখেন, তিনি আজ পর্দার ফাক দিয়ে দেখছিলেন । কর্তার চোখ যতই খুলতে দেখা গেল— কর্মচারীর দম ততই বন্ধ হয়ে আসতে লাগল। আজ কর্তা অনেকটা চোখ খুলেছেন ; না জানি আজ কপালে কী আছে এই ভাবতে ভাবতে তত্ত্বাবধানিক যখন তিনশোতেত্রিশ কোটি দেবতার নাম জপছিলেন এবং দশ আঙলে কচ্ছপমুদ্রা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কর্তার নাকের উপরে কচ্ছপের খোলায় বাধানে চশমাটিকে শাপ দিচ্ছিলেন যেন ওর কাচচুখানা এখনই গুড়িয়ে ধুলো হয়ে যায়– এমন সময় সত্যিই চশমাখানা খুলে কর্তা ডাক দিলেন—‘কোই হ্যায়। কচ্ছপমুদ্রা দেখাতেই হুজুণের চশমা চোখের উপর থেকে সরে গেল, কর্মচারী নিশ্বাস ফেলে বাচলেন । তিনশো তেত্রিশ কোটিকে একে-একে প্রণাম করবার তার সময় হল না, তিনি দরজার চৌকাটে তিনবার মাথা ঠুকেই খালি পায়ে কর্তার সামনে উপস্থিত হলেন । তখন কর্তার চোখ আবার বারো-আনা বন্ধ হয়ে এসেছিল । তিনি বললেন– এই বইখানাতে আমার এ বাগানের একটি পাখির কথা লিখছে, বলছে—আমাদের যত কিছু অদ্ভূত আসবাব আছে সেগুলো কিছুই రిశ్రి)