বিদেশীর মুরসিক সভায় হুজুরের মজলিসের বিবরণ এবং পাখির সম্বন্ধে উক্ত মজলিসের চূড়ান্ত মীমাংসার খবর পৌছেছিল নিশ্চয়ই। কেননা হুজুরের যারা হুজুর এমন সব দেশীয় ছেলে-ছোকরা ও স্কুলবয়ের দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে বুড়ে বুড়ে যত বিদেশীয় মহাপণ্ডিতেরা হুজুরকে একটি রঙচঙে টিনের পাখি প্রাইজ পাঠালেন, তার পেটে একটা গ্রামোফোন ও মোহিনী ফুট পোর ছিল। শুভদিন দেখে দেশের যত লক্ষ্মী ছেলেরা সেই পাখিটি নিয়ে খুব ঘটা করে হুজুরকে একটি অভ্যর্থনা দিতে এল এবং মজলিসের মধ্যখানে এসে যন্ত্রটায় কষে দম লাগিয়ে দূরে গিয়ে অপেক্ষা করে রইল। দু-চারটে মোট গলা, দু-দশটা মিহি গলার গানের পর ফোনটা একেবারে চুপ করেই প্রকাণ্ড ঝড়ের মতো একটি হাসি শুরু করলেন– সে একেবারে বিলিতি হাসি, তার চোটে হুজুরের পুরোনো মজলিস-ঘরের দেওয়াল চটে ফেটে চৌচির হয়ে হাওয়ার মুখে তাসের বাড়ির মতো ভেঙে পড়ল—একেবারে হুজুর,র্তারকর্মচারী ও সদস্যবৃন্দেব ঘাড়ের উপরে। ঠুনকে মাটির দেওয়াল, আঘাত মোটেই মারাত্মক হল না, কেবল সকলে বিষম ভয় খেয়ে চিৎকার করতে লাগল— ‘ওরে গোহত্যা করলে রে ” এই সময় পাণ্ডব-বর্জিত দিক থেকে যত লক্ষ্মীছাড়া— তারা সেই ছোটাে জাতের মেয়েটিকে কাধে নিয়ে হুজুরের ভাঙা মজলিসে দল বেঁধে দেখা দিলে । সেই মেয়ের গলায় পাখি গানের স্বর হিরের সাত-নলী হারের মতো ঝকঝক করছে।