পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গঙ্গাফড়িং একে জায়গাটা আদিগঙ্গার পশ্চিমকুলে, তার উপরে একটা রামতুলসীতলাও পাওয়া গেল। গঙ্গাফড়িং মহা আনন্দে সেইখেনে আখড়া বসিয়ে দেশের ফড়িংদের নিয়ে অষ্টপ্রহর সঙ্কীর্তন জুড়ে দিলেন। তুলসীপাত খেয়ে খেয়ে গঙ্গাফড়িং ক্রমে নবদূৰ্বাদল-শ্বাম বর্ণটি হয়ে উঠুন,ফড়িংগুলো কাদাগোল গঙ্গাজল খেয়ে গঙ্গামৃত্তিকার অলকা-তিলকার ছাপমারা হয়ে থাকুন, এদিকে গঙ্গার ওপারে খুদে পি পড়ে ডেয়ে পিপড়ে তারা মাঠের মধ্যে গড়-গোষ্ট হাট-বাজার ঘর-কন্না পেতে বসবার জোগাড়ে সকাল থেকে সন্ধে খুদকুঁড়ো সংগ্রহ করে কেবলি খাটছে। বাস্রে সে কী খাটুনি ! রোদে পুড়ে ডেয়েগুলো কালো হয়ে গেল, রাঙামাটি খুড়তে খুঁড়তে খুদে পিপড়েগুলোর গায়ের বর্ণ পোড়ামাটির মতো রঙ ধরলে। এইভাবে দিন যায়। গঙ্গাফড়িংয়ের ‘গঙ্গা গঙ্গা’ বলে হুল্লোড় করে দিন যায় আর পিপড়ের দিন যায় কাজ কাজ’, কেবলি কাজ করে। ক্রমে বর্ষা গেল, শরৎ গেল, শীত কাটলে শেষে বসন্তকালটাও ফুরালো। খরার দিনে আদিগঙ্গার জল ম’রে তলার মাটি পর্যন্ত ফেটে চটে শুকিয়ে উঠল— মাঠগুলোয় আর ঘাসও গজায় না, গাছও বঁাচে না, কেবলি ধুলো ওড়ে আর আকাশের শেষ পর্যন্ত আদিগঙ্গর দুইপার ধুধু করতে থাকে। পিপড়েরা মাটির তলায় ঢুকছে। সেখানে তাত একটুও নেই, জমা করা খাবারও যথেষ্ট— পি পড়েরা আরামেই রইল। আর গঙ্গাফড়িং শুকনে রামতুলসীর তলায় না পান হাওয়া, না পান খাওয়া— তাই একদিন ওপার থেকে এপার ভিখ, মাঙতে চললেন। পিপড়েদের খুদে শহরে খুদকুঁড়োর গুলজার বাজার বসেছে— পিপড়েরা আসছে, যাচ্ছে, নিচ্ছে, খুচ্ছে— গঙ্গাফড়িংকে দেখেও তারা দেখে না। বেলা বাড়ল, খিদেয় ৩ার পেট জ্বলল, তেষ্টায় voፃፃ