পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দবাদের প্রথম সিন্দবাদের শেষ যাত্রা সিন্দবাদ ছিল এক রকমের মানুষ আর হিন্দবাদ ছিল ঠিক তার উল্টো ধরনের লোক। সিন্দবাদ বারে বারে যায় সাত-সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে, রত্নগিরি, সলাবত দ্বীপ, বালাশোর বন্দর, কাফ্রিস্তান, নারকেল-নগর, চন্দন-দ্বীপ, কুমারিক অন্তরীপ, সরন্দিপ এমনি কত দেশ-বিদেশে বাণিজ্যপোত ভেড়াতে ভেড়াতে, কোথাও আর বাকি নেই। আর হিন্দবাদ থাকে বোগদাদে বসে আর গল্প শোনে সিন্দবাদের কাছে ; বক পাখির গল্প, মহীরাজের ঘোড়ার কথা, লোমশ মানুষের ইতিহাস, অজগর সাপের কাহিনী, বিষ-লতার, গোলমরিচের ক্ষেতের আরবি পাশার, জিন-লাগাম-শূন্ত ঘোড়-সওয়ারের, কবরী কন্যার, ভীষণ বুড়োর, মুক্তোর ক্ষেতের, বোম্বেটে জাহাজের, হাতি শিকারের নানা অদ্ভুত অদ্ভুত খোস গল্প উপ্টে পাণ্টে কতবার তার ঠিক নেই ; আর এক এক গল্প শোনার পরে একশো কবে সোনার মোহর সিন্দবাদের কাছে দাবি করে । সিন্দবাদ এক-একবার বাণিজ্য যাত্রা করত, আর হিন্দবাদ গালে হাত দিয়ে সমুদ্রের দিকে চেয়ে ভাবত— যদি সিন্দবাদের জাহাজ হঠাৎ কোনো দ্বীপে চিরকালের মতো আটকে যায়, কিম্বা সিন্দবাদ ফিরেই না আসে, কোনো দেশের কোনো রাজকন্যাকে বিয়ে করে সেই দেশেই সংসার পেতে বসে, তা হলে উপায় কী হবে ? কিন্তু সিন্দবাদের জাহাজ ডোবে, চড়ায় আটকায়, সিন্দবাদও ধরা পড়ে যায় কখনো কখনো কিছুদিনের জন্যে, আবার কিন্তু ফিরে আসে সিন্দবাদ– নতুন বাণিজ্যপোতে জাহাজ বোঝাই গল্প আর মাল-মাত্তা মাঝি-মাল্লা নিয়ে । সিনাবাদ প্রতিবারেই ফিরে আসে আর বলে— এই শেষ, আর যাব না। কিন্তু প্রতিবারেই সমুদ্রের নীল জল আকাশের মতো ঘন নীল হয়ে ওঠে বছরের শেষে, আর সিন্দবাদ জাহাজ সাজিয়ে \రివ8