পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর কী বলছ তুমি ?” রাজা উত্তর না দিয়ে পাশ ফিরে গুলেন। রানীর সারারাত আর ঘুম এল না, কেবলই মনে হতে লাগল— সে ঘরটা ! সেই যে পুরোনো আটচালা— যার এক কোণে গোসাঘর, অন্ত কোণে খাজনা-বব, সে কোণে পোষা পাখি, ও কোণে বাধা বীণা, সে ঘর খুজতে রাজা বার হলেন যুদ্ধের ঘোড়ায়। রানী চললেন চতুর্দোলে। দেশে বিদেশে খুজে হায়রান— কোথাও নেই সে পুবোনো ঘব। হতাশ হয়ে নতুন রাজাবাড়িতে বসেন বুড়ে রাজারানী ! রাজা বলেন– “হায় আমার সে সোনার খাচা ।” রানী বলেন– “আহা, আমাৰ সে বাধা বীণ !” রাজপণ্ডিত— তিনি থেকে থেকে উপদেশ দেন দুজনকে ‘গতস্ত শোচনা নাস্তি ? বাজা-রানী পণ্ডিতের কথায় কানই দেন না ; খোজাখুজি চলে সব কাজ চড়ে । বাজমিস্ত্রীবা মাটি খুড়ে পুরোনো ঘরটা খোজে, নতুন ভিত ভেঙে দেখে– পুবোনো ঘবটার নাগাল পায় কি না। রাজমন্ত্রীব বেশি বুদ্ধি, তাই তিনি চুপি চুপি রাজমজুর খাটিয়ে একটা নতুন ঘর তুলে তাকে আবাব ধুলো-কাদা দিয়ে ঠিক পুরোনো করে, চাব-কোণ ঘবটাকে ভাঙা বীণ, ভাঙা খাচী, মরচে-ধরা তালা, উইপোকায় খাওয়া সিন্দুক দিয়ে বেশ ক'রে সাজিয়ে রাজারানীকে ভুলিয়ে দেবেন ভেবে মহাসমারোহে একদিন দুজনকে সেখানে নিয়ে উপস্থিত। কিন্তু পুরোনো করা নতুনে কাজ হবে কে ? মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব নিয়ে টানাটানি পড়ল । পণ্ডিত হারল, মন্ত্রী হারল, ডাক পড়ল তখন চিত্রকবের । পাকা পেটে সে, কামরূপের মন্তর-জানা পোটো, মনের মতোকে ধরার রঙিন বুলি কাধে সে ফেরে দেশে দেশে। রাজা-রানীর দুঃখ দেখে সে বললে, “মহারাজ, মহারানী, আমার সঙ্গে চোখে কাপড় বেঁধে চলে আসুন, দেখাব সেই ঘর।” চোখ বেঁধে রাজা-রানী চলেন দিনের পর দিন— কিছুই দেখেন না। শুধু দিনই যায় এইটুকু জানেন র্তারা । থেকে থেকে রাজা শুধোন, “ওহে চিত্রকর, আর 8있》