পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিছু আর রইল না গায়ে। খেয়ে দেয়ে যেটুকু বা রক্ত হয়েছিল গায়ে তাও সবটা বেরিয়ে গেল একদম । খালি রইল হাড-কখানার মধ্যে ধুত্বপুর্ব্ব করতে র্তার প্রাণটুকু ! রাজ-রক্ত মাটিতে পড়ে মাটি হয় দেখে মশার দল এসে জুটল চারিদিক থেকে। ভোম্বলদাসকে তারা ঘিরে রইল দিনরাত খুব সাবধানে। তার গায়ে ফুড়ে ফুড়ে সব কড়া ওষুধ দিতে থাকল। কেউ তারা রক্ত পরীক্ষা করে দেখে— ম্যালেরিয়া হল কিনা । কেউ দেখে টাইফয়েড হল কি কালাজ্বর ? এমনি রক্ত শুষতে শুষতে যখন ভোম্বলদাসের লাল চামড়া প্রায় শাদা হয়ে এসেছে সেই সময় শেয়ালপণ্ডিত ধুচুনি মাথায় ডুগডুগি বাজাতে বাজাতে হাজির ৷ একেবারে রাঙা চেলি-পরা বরের সাজ কিন্তু নাকটি কাটা । ভোম্বলদাস শেয়ালের সেই চেহারা দেখামাত্রই এমন অটঙ্গাসি হাসলেন যে তাতেই তার প্রাণ বেরিয়ে গেল ! ভাগনের খবর, সুন্দরবনের কথা শুধোবার কিম্ব ভাড়ার-ঘরের চাবি ফিরে চাইবার আর সময়ই হল না । শেয়ালপণ্ডিত খানিক হতভম্ব হয়ে মেয়ে থেকে একটা নটে গাছের গোড়ায় রাজ-ভাণ্ডারের চাবিট। ছুড়ে ফেলে দিয়ে নিজের গর্তে ঘুমতে গেল ; আর একটা ছাগল— ঠিক তেমনি ছাগল, যাদের পাটার জুস খেয়ে ভোম্বলদাস নিজের গায়ের রক্ত কৰেছিল— সে কোথা থেকে এসে বনের ধারে—নটে গাছটার গোড়া মুড়িয়ে খেয়ে দিব্যি আরামে কৈলাস-পর্বতের মতো প্রকাও উই ঢিবির চূড়োয় তিন লাফে গিয়ে উঠল— ঠিক হুকুর বেলা, যখন ভূতে মারে ঢেল । সেখান থেকে সে শুনলে সুন্দর-বনে নতুন রাজার অভিষেকের দিনে জোড়া পাট গর্দান দেবার আগে তাকে ডাকাডাকি করছে ম্যা ম্যা ব’লে ! 89ፃ